পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ সুশ্রীতা সোরেনের।
শেষ আপডেট: 6th March 2025 14:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছাত্র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম বিশৃঙ্খলা! বিক্ষুব্ধ এআইডিএসও-র ছাত্রদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে আন্দোলনকারীদের আটক করে পুলিশ এবং থানায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। পুলিশের বিরুদ্ধে সিসিটিভির নজরদারির বাইরে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক হেনস্থার মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।
অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা ও থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের দাবিতে মামলার আবেদনও জানিয়েছেন মামলকারীরা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মামাল দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। সোমবার এই মামলার শুনানি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির নীচে এক ছাত্রের চাপা পড়ার অভিযোগের জেরে রাজ্যজুড়েই চলছিল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সোমবার, মঙ্গলবার নানা জায়গা থেকেই বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর এসেছে দিনভর। কিন্তু মেদিনীপুরের যে সমস্ত ভিডিও, ছবি সামনে এসেছে, তা দেখে অনেকেই মনে করছেন, পুলিশের তরফে বেশ আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই যাদবপুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে হাইকোর্ট। তার ঠিক পরের দিনই মেদিনীপুরের পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ সামনে আনল বাম ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন প্রাক্তনীর দাবি, ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁদেরকে বিনা প্ররোচনায় আটক করে পুলিশ এবং থানায় নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়।
দলীয় নেত্রী সুশ্রীতা সোরেন দাবি করেন, ‘থানায় নিয়ে গিয়ে ওসি প্রথমেই মোমবাতির জ্বলন্ত মোম আমার হাতে ঢেলে দেয়। এরপর বারবার কিল, চড়, ঘুষি মারা হয়। পুলিশ হুমকি দেয়, এখানে মেরে পুঁতে ফেললেও কেউ জানতে পারবে না।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘আমাদের সিসিটিভির আওতার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে বলা হয়, ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গিয়েছিলাম, পুলিশের উপর কোনও হামলা করিনি, তাহলে ক্ষমা চাইতে হবে কেন?'
সংগঠনের দাবি, তাঁদের আরও একাধিক সদস্যকেও অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। থানার ওসির বিরুদ্ধে কোমরের বেল্ট খুলে মারধরেরও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। সুশ্রীতা বলেন, ‘আমাকে একটা ঘরে একা রাখা হয়। বলা হয় চুলের ক্লিপ খুলে দিতে। এরপর পুলিশ সদস্যরা আমার পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকেন, যাতে বেত দিয়ে মারার সময় আমি নড়তে না পারি।’
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তাঁর দাবি, ‘পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আইনের পরিসীমার মধ্যেই সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ভেবেই সংবেদনশীলভাবে কাজ করা হয়েছে। বামপন্থী একটি দলের জেলা নেতারা এটাকে ইস্যু করার চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, 'উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন ছিল ওটা। সেকথা মাথায় রেখেই আগাম কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সব পক্ষের জমায়েতকেই পুলিশ আটকেছে, কোনও রাজনৈতিক রং না দেখেই। কারণ উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষার্থীদের সমস্যা হতে পারত। গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য যা যা করার দরকার, পুলিশ তাই করেছে। দুটি এফআইআর হয়েছে।'