শেষ আপডেট: 29th October 2024 11:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব মেদিনীপুর: সকাল থেকে ওদের কেউ ঝাড় দিয়ে সাফসুতরো করছে আশ্রম, কেউ ঝেড়ে দিচ্ছে ঝুল। রামকৃষ্ণ মঠ সেবাশ্রমে যে কুড়ি দিন সেবামূলক কাজ করতে হবে তাদের। আসলে এমন ব্যতিক্রমী শর্তেই জামিন দেওয়া হয়েছে পাঁচ অনলাইন জুয়াড়িকে। তমলুক জেলা আদালতের বিচারকের সেই অভিনব রায় খুশি সরকারি ও অভিযুক্তদের আইনজীবাদেরও।
২৪ শে অক্টোবর তমলুক থানার নিমতৌড়িতে অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করে তমলুক থানার পুলিশ। ধৃতদের তমলুক সিজিএম কোর্টে তোলা হলে বিচারক অভীক কুমার চট্টোপাধ্যায় তিনটি শর্তে তাদের জামিন দেন।। প্রথমত কোর্টের নির্দেশ ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত সপ্তাহে একদিন তদন্তকারী অফিসারের সামনে হাজিরা দিতে হবে। তবে তৃতীয় শর্তটি একেবারেই অন্যরকম। কুড়ি দিন সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তমলুক রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সেবাশ্রমে সেবা মূলক কাজ করতে হবে তাদের। আদালতের নির্দেশের কপি রামকৃষ্ণ মিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সঙ্গে সঙ্গেই।
তারপর থেকেই প্রত্যেকদিন সকাল দশটায় পাঁচ জন হাজিরা খাতায় সই করে ঢুকছে আশ্রমে। তারপর যখন যেমন বলা হচ্ছে তেমনই ভাবে আশ্রমের কাজ সারছেন তাঁরা। কখনও আশ্রম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, কখনও আবার দাতব্য চিকিৎসালয়ে অন্যরকম কোনও কাজ। পাঁচটায় ছুটি হলে রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষের কাছ থেকে হাজিরা খাতা সই করিয়ে বাড়ি ফিরছেন।
গত ২৪ শে অক্টোবর তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ একটি সোর্স মারফত খবর পেয়ে ওই জুয়ার ঠেকে হানা দেন। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় সুধীর শেঠ, হরিপদ মণ্ডল, রবি রাউত, মুর্শেদ মল্লিক ও শেখ আশিক আলি নামে পাঁচজনকে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে কোর্টে পাঠায় পুলিশ। এরপরেই বিচারক দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে তিন শর্তে জামিন দেয় ধৃতদের। তমলুক সিজিএম কোর্টের এই অভিনব নির্দেশকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ।