গ্রাফিক্স, দ্য ওয়াল।
শেষ আপডেট: 25 January 2025 10:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! বিষাক্ত স্যালাইন কাণ্ডে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যালে একাংশ চিকিৎসকের প্রক্সির (খাতায়-কলমে রয়েছেন, কিন্তু সশরীরে নেই) বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন তদন্তকারীরা। এবার সামনে এল পরিষেবা সংক্রান্ত অন্যান্য অনিয়মও।
স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি সিআইডিও ঘটনার তদন্ত করছে। আর সেই তদন্তের সূত্র ধরেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে খবর। রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সরকারি হাসপাতালে আদতে সব ফ্রিতে করার কথা থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষে চ্যানেল করা থেকে ট্রলি খুঁজে দেওয়া, বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন উৎকোচ দিতে বাধ্য হন রোগীর পরিজনরা।
অভিযোগ, অজানা কারণে হাসপাতালে ট্রলি গুলি অদৃশ্য জায়গায় রাখা থাকে। ১০০ থেকে ১৫০ টাকার বিনিময়ে সেগুলির দেখা মেলে। তবে টাকা দিলেও ট্রলি ঠেলতে হয় বাড়ির লোককেই। একইভাবে রাতের দিকে নার্সরা চ্যানেল করতে চান না বলে অভিযোগ। পরিবর্তে টাকার বিনিময়ে সেই কাজ করেন আয়ারা।
চিকিৎসক, নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মী- অনিয়মের সঙ্গে জড়িত একাংশ। তদন্তে নেমে এই অসাধুচক্রকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক অসাধু চিকিৎসকের কীর্তি ফাঁস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যেদিন প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল সেদিন মেদিনীপুর মেডিক্যালের রেজিস্টারে সই করে একজন চিকিৎসক বালিচকের নার্সিংহোমে তিনটে অপারেশন করেছেন।"
এরপরই সরকারি চিকিৎসকদের ৮ ঘন্টা ডিউটির কথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা তিনি বরদাস্ত করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি চিকিৎসকদের প্রতিও সহানুূভূতিশীল, কিন্তু যেখানে অন্যায় হয়, সেখানে আমার কিছু যায় আসে না। মানুষের দিকটাও দেখা আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।"
জানা যাচ্ছে সেই সূত্রেই, হাসপাতালের অসাধুচক্রের সঙ্গে চিকিৎসক নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের কে কে জড়িত তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
বিষাক্ত স্যালাইন কাণ্ডে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে শুক্রবারই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের দু'জন চিকিৎসক (দিলীপ কুমার পাল ও হিমাদ্রী নায়েক)কে ভবানীভবনে জেরা করেছেন গোয়েন্দা কর্তারা। জানা যাচ্ছে শীঘ্রই বাকিদেরও তলব করা হবে। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে ১৩ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআর জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
প্রসঙ্গত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, "নেগলিজেন্স ইজ অলসো আ ক্রাইম! মানুষের প্রাণের চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। তাই কারও গাফিলতি থাকলে তাকে বরদাস্ত করা হবে না।"