শেষ আপডেট: 15th January 2025 12:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে সিআইডি। মঙ্গলবার মেডিক্যালের সুপার জয়ন্ত রাউৎ এবং অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দীকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনার দিন হাসপাতাল এবং ওটির ভিডিও ফুটেজও খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রে ওই দিন হাসপাতালে কোন চিকিৎসকদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল, পরিবর্তে কারা ছিলেন, অপারেশনের দায়িত্ব কারা সামলেছেন-এসব বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মামনি রুইদাসের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের ইউনিট ১ সি-এর চিকিৎসকরা। জানা যাচ্ছে, ঘটনার দিন অপারেশন থিয়েটারে থাকার কথা ছিল বিভাগের একজন আরএমও, দু’জন সহকারী অধ্যাপক এবং তিনজন সিনিয়র রেসিডেন্টের (এসআর)। এছাড়়াও অ্যানাস্থেসিওলজি বিভাগের একজন সিনিয়র রেসিডেন্টেরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
কিন্তু ওই পাঁচজন চিকিৎসকের কাউকেই সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়নি বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর। অভিযোগ, শুধু ঘটনার দিনে নয়, হামেশাই রাতের ডিউটিতে থাকেন না সংশ্লিষ্ট পাঁচ চিকিৎসক। শুধু ওই পাঁচজনই নন, সিনিয়র চিকিৎসকদের সিংহভাগকেই রাতে দেখা যায় না বলে ইতিমধ্যে তদন্তকারীদের কাছে অভিযোগ করেছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।
তদন্তে নেমে সিআইডি এও জানতে পেরেছে, সেদিন ডিউটিতে থাকাকালীন 'বিশ্রাম' নিচ্ছিলেন গাইনির আরএমও। প্রথম বর্ষের একজন পিজিটিকে দিয়ে প্রসূতিকে অচেতন করা হয়েছিল। অপারেশন করেছিলেন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দু’জন পিজিটি।
প্রসঙ্গত, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর গাফিলতির কথা ইতিমধ্যে স্বীকার করে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, প্রসূতিদের চিকিৎসার সময় প্রোটোকল মানা হয়নি। অস্ত্রোপচারের সময় সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতি থাকা উচিত ছিল, যা ঘটেনি।
তবে তদন্ত নিয়ে যতটা হইচই হচ্ছে, আদতে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তি হয় কিনা,ত তা নিয়েও সন্দিহান রোগী ও তাদের পরিজনেরা। তাঁদের বক্তব্য, নিষিদ্ধ স্যালাইনের ব্যবহার থেকেই স্পষ্ট যে নজরদারিতে খামতি রয়েছে। ফলে চিকিৎসকদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্তারাও দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। যেহেতু অনেকের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ উঠছে, তাই আদৌ কোনও পদক্ষেপ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে মেডিক্যালের অন্যান্য রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।