গ্রাফিক্স- দ্য ওয়াল।
শেষ আপডেট: 14th January 2025 20:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মেদিনীপুরে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সামনে এসেছে 'নিষিদ্ধ' স্যালাইনের প্রসঙ্গ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরও। গাফিলতির দায় খুঁজতে রাজ্যের নির্দেশে শুরু হয়েছে সিআইডি তদন্তও।
সেই সূত্রেই সরকারি হাসপাতালের স্যালাইন, ওষুধের ওপরে আর ভরসা রাখতে পারছেন না অনেক রোগী ও রোগীর পরিবার। তাঁদের বক্তব্য, "ওই বাচ্চাটার কথা ভাবুন তো! যে জন্মের পরই মায়ের দুধও খেতে পেল না! যার গেল, তার তো গেল! ভবিষ্যতে যে আবার এ্মন ভুল আবার হবে না, তার গ্যারান্টি কোথায়?
চিকিৎসার বিষয়ে রাজ্যের সিংহভাগ মানুষের এখনও প্রধান আশ্রয়স্থল হল সরকারি হাসপাতাল। তবে গত শুক্রবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতির মৃত্যু এবং সেই সূত্রে উঠে আসা নিষিদ্ধ স্যালাইনের ঘটনাকে ঘিরে সরকারি হাসপাতালের ওষুধ, স্যালাইনে আর ভরসা রাখতে পারছেন না রোগী ও তাদের পরিজনেরা।
এই ছবিটা শুধু মেদিনীপুর মেডিক্যালে নয়, বাঁকুড়া মেডিক্যাল, রায়গঞ্জ, পুরুলিয়া-সহ একাধিক হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী ও রোগীর পরিজনেরা আর সরকারি হাসপাতালের স্যালাইন কিংবা ওষুধে বিশেষ ভরসা করতে পারছেন না। রাজ্যের মানুষের জন্য ইতিমধ্যে অধিকাংশ হাসপাতালে চালু করা হয়েছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান। সেখানে বাজারের চেয়ে অনেকটা কম দামে ওষুধ পাওয়া যায়। তবে সরকারি ওই কাউন্টার থেকেও গত কয়েকদিন ধরে রোগীদের অনেক পরিজনকেই ওষুধ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
মেদিনীপুরে ভর্তি গড়বেতার এক রোগীর আত্মীয় অনিমা ঘোষ বলেন, "নার্সিংহোমে রাখার সামর্থ্য নেই। ওখানে তো প্রতিদিন বেড ভাড়া, সহ নানা খরচ। তাই উপায়ন্তর না থাকায় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছি ঠিকই। কিন্তু যেভাবে বিষাক্ত স্যালাইনে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল, তাতে আর সরকারি হাসপাতালের ওষুধ, স্যালাইনে আর ভরসা রাখতে পারছি না।" জ্বর-পায়খানা নিয়ে গত শুক্রবার থেকে মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন অনিমাদেবীর স্বামী।
একই ছবি বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যালে। খাতরার বাসিন্দা সঞ্জয় দত্ত বলেন, "আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় মাকে সরকারি হাসপাতালে এনেছি ঠিকই, কিন্তু সরকারি ওষুধে আর ভরসা পাচ্ছি না। বাধ্য হয়েই বাইরে থেকে ওষুধ, স্যালাইন কিনে আনছি।"
গত শুক্রবার নিষিদ্ধ স্যালাইনে মৃত্যু হয় মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার এক গৃহবধূর। আশঙ্কাজনক আরও তিনজনকে ইতিমধ্যে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ডও। তবে গোটা ঘটনায় রাজ্যজুড়ে নতুন করে তোলপাড় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাই নয়, সরকারি হাসপাতালের প্রতি আস্থা হারাতে শুরু করেছেন বহু মানুষ।
আগের চেয়ে বিক্রি যে কমেছে, তা মেনে নিয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের মধ্যে থাকা নাহ্য মূল্যের ওষুধ কেন্দ্রের এক কর্মী। তবে এ ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার জয়ন্ত রাউৎ এবং অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দীর।