দেবাংশু ভট্টাচার্য।
শেষ আপডেট: 4th March 2025 19:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে (Jadavpur University) শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya basu) গাড়ির তলায় আদৌ কেউ চাপা পড়েছিল নাকি সবটাই মাও-সিপিএমের আঁতাত, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল তৃণমূল।
এদিন তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে এ প্রসঙ্গে বাম ও এসএফআই নেতাদের উদ্দেশে একগুচ্ছ প্রশ্ন রেখেছেন দলের আইটি ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattachariya)।
দেবাংশু বলেন, "ব্রাত্য বসুর স্করপিওর চাকার তলায় একজন ঢুকে রয়েছেন বলে যে স্ক্রিনশট সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, এর ভিডিওটা কোথায়? আড়াআড়িভাবে ইন্দ্রানুজ শুয়ে থাকলে তার ওপর দিয়ে স্করপিওর মতো বড় গাড়ি গেলে শুধুমাত্র চোখে চোট লাগল, এটা কীভাবে সম্ভব? বলা হচ্ছে, ইন্দ্রানুজের চোখের ওপর দিয়ে নাকি গাড়ির চাকা গেছে! চোখকে টায়ারের অংশ টাচ করতে হলে নাক, কপাল, গালের হাড় তো ভেঙে যাওয়ার কথা! মাথাও তো থেঁতো হয়ে যাওয়ার কথা! অথচ শুধুই চোখে চোট অর্থাৎ ফেক ছবি ছড়িয়ে মিথ্যে সহানুভূতি কুড়ানোর চেষ্টা। তা না হলে ভাইরাল স্ক্রিনশটের প্রকৃত ভিডিও সামনে আনুক এসএফআই-সিপিএম।"
এরপরই সিপিএম-মাওবাদী আঁতাত বোঝাতে ২০২৩ সালের ১২ জুন ফেসবুকে শেয়ার করা ইন্দ্রানুজ রায়ের একটি পোস্ট তুলে ধরে দেবাংশু বলেন, "ইন্দ্রানুজ মাওবাদী, এটা আমরা বলছি না, ওর ফেসবুক পোস্ট দেখুন। নিজেই নিজেকে গর্ব করে বলছে- ও মাওবাদী। পোস্টে নিজেই লিখেছে, মার্কসবাদ , মাওবাদ দীর্ঘজীবী হোক।"
কটাক্ষের সুরে যোগ করেছেন, "নৈহাটি উপ নির্বাচনে সিপিআইএমএলের সঙ্গে জোট করেছিল। এখন মাওবাদীদের সঙ্গে যৌথভাবে আন্দোলন করছে। শূন্য হয়ে যাওয়ার পর বামেদের আদর্শগত বিচ্যুতিও হয়ে গেল। সেটা তো যাদবপুর প্রমাণ করে দিল।"
দু'বছর আগে যাদবপুরে ব়্যাগিংয়ে এক পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে শোরগোল তৈরি হয়েছিল। ক্যাম্পাসের সর্বত্র সিসিটিভি মোতায়েনের দাবি উঠেছিল। দু'বছর পরও অবশ্য যাদবপুর ক্যাম্পাসের একাংশে সিসিটিভি নেই। ওই প্রসঙ্গ টেনে দেবাংশুর প্রশ্ন, "আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিসিটিভি থাকলে শনিবারের ঘটনা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যেত যে কারা আক্রমণ করেছিল। কাদের বাধায় সেখানে আজও সিসিটিভি বসল না? কারা যাদবপুরকে মুক্তাঞ্চল বানিয়ে রেখেছে?"
এ প্রসঙ্গে জবাব দিতে গিয়ে ইন্দ্রানুজের পুরনো একটি ভিডিওকে তুলে ধরেছেন দেবাংশু (ভিডিওর সত্যতা দ্য ওলায় যাচাই করেনি)। যেখানে ইন্দ্রনুজকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "২০২০ সালের পর যাদবপুরে ইলেকশন করতে দেয়নি এসএফআই। এখানে বিরোধীদের কেউ প্রার্থী হতে গেলে এসএফআই লাশ ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়।"
দেবাংশুর অভিযোগ, শনিবার ওয়েবকুপার সম্মেলনে অশান্তি তৈরির জন্য আগে থেকেই মাও-এসএফআই আঁতাত তৈরি করেছিল। এ প্রসঙ্গে একটি হোয়াটসঅ্যাপ চার্টও সামনে আনেন তৃণমূলের তরুণ নেতা। এরপরই বামেদের ছাত্র সংগঠনের উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন দেবাংশু। তাঁর কথায়, "দেড় মাস আগে এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে যাদবপুরে সন্ত্রাস, খুনের অভিযোগ এনেছিল ইন্দ্রানুজ। তার ওই অভিযোগ কি সত্য? কী বলবেন এসএফআই নেতারা?"
প্রসঙ্গত. এদিনই ইন্দ্রানুজের বাবাকে ফোন করে শনিবারের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন ব্রাত্য বসু। স্বয়ং মন্ত্রী যেখানে দুঃখপ্রকাশ করেছেন সেখানে দলের তরফে তিনি কীভাবে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনছেন? দেবাংশু বলেন, "এভাবেও যে মাও-সিপিএম আঁতাত করে মিথ্যাচার করতে পারে, সেটা ব্রাত্য বসুও ভাবতে পারেননি। তাছাড়া ওনার গাড়ির চারিদিকে সবাই ঘিরে ধরেছিল। ফলে ভেতর থেকে বসে সবটা বোঝা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। এখন পুরো বিষয়টা জলের মতো স্পষ্ট। যাদবপুরের মিথ্যাচারকে আঁকড়ে সিপিএম ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ওদের সেই মিথ্যে ফাঁস করে দিলাম।"