শেষ আপডেট: 19th October 2024 15:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাসপাতালে কাজ না করে বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজ করার অভিযোগ উঠছিল একাংশ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এবার এবিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যসচিবের ফোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আপনারা কি জানেন, আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারি হাসপাতালে কাজ না করে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে অপারেশন করেছেন। আমি কি তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব?"
পরক্ষণেই মুখ্যমন্ত্রীর অভয়, "অনেক অবৈধ কাজের অভিযোগ আসছে, তারপরেও আমরা কোনও কড়া পদক্ষেপ নিইনি। মনে রাখবেন, আমরা মানবিকতার পক্ষে।"
১০ দফা দাবিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সরকারের তরফে বারংবার অনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানালেও নিজেদের দাবিতে অনড় তাঁরা। শুক্রবার সন্ধেয় রাজ্যকে ডেডলাইন দিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, সোমবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ধর্মঘট পালন করা হবে।
এরপরই শনিবার দুপুরে ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপচারিতার পর মুখ্যসচিব মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন লাগান। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানান।
এসময়ই একাংশ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরকারি ডিউটিতে ফাঁকি দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করার অভিযোগ আনেন মমতা। আন্দোলনকারীদের তরফে বলা হয়, '"ম্যাম আপনার কাছে ভুল খবর যাচ্ছে"।
মুহূর্তে তা খারিজ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমিও বিশ্বাস করি না, তবে অবৈধ কাজের অভিযোগ আসছে।" এরপরই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের অপারেশনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন। দৃশ্যতই কিংকর্তব্যবিমূঢ় দেখিয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের।
পরে মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, "গায়ের জোরে সব কিছু হয় না, আলোচনার মাধ্যমেই সব হয়। মনে রাখবেন আমাদের সরকার কিন্তু মানিবক। এখনও একজনের বিরুদ্ধেও কোনও পদক্ষেপ করেনি।"
বস্তুত, চিকিৎসকদের লাগাতার কর্মবিরতির সময় শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আন্দোলনকারীরা কাজে না যোগ দিলে রাজ্য চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে রাজ্য যে কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্য়বস্থা নেয়নি, সেটাই পরোক্ষে মনে করাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
একই সঙ্গে পরিষ্কারভাবে এও জানিয়ে দেন, ১০ দফা দাবির মধ্যে ২ নম্বর দাবিটি মানা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যর্থতার দায় স্বীকারের দাবি ছিল ২ নম্বর পয়েন্টে।
বাকি দাবি পূরণে সোমবার বিকেল পাঁচটায় নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে পরিষ্কারভাবে মনে করিয়ে দিয়েছেন, 'সময়ে আসতে হবে। ১০ জনের বেশি যেন কেউ না যান।'
অর্থাৎ এদফায় বৈঠকের আগেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইলেন, সরকার আলোচনায় আগ্রহী, তবে বৈঠকের নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে রাখা তিনি আর বরদাস্ত করবেন না।