বাড়ির ছাড়ার আগে। গ্রাফিক্স- দ্য ওয়াল।
শেষ আপডেট: 10 May 2025 13:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশ ভক্তি বোধহয় একেই বলে।
অফিসিয়ালি এখনও যুদ্ধ ঘোষণা হয়নি। তবে ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে এক নেপালি-সহ ২৬ জন ভারতীয়কে জঙ্গিরা নৃশংসভাবে খুন করার পর থেকেই ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমেই চড়ছে (india pakistan tension)। বাড়ছে হামলা, প্রত্যাঘাতের মাত্রা।
ঠিক এমন যুদ্ধের আবহেই দেশের কাজ করার জন্য ভারতীয় সেনার অগ্নিবীর (Agnivir of Indian Army) পদে যোগ দিতে বাড়ির নিরাপদ আশ্রয় ছাড়ল ঘরের ছেলে। ঘটনাস্থল, জলপাইগুড়ি জেলার (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ি থানা এলাকার পানবাড়ি অঞ্চল।
মনোরঞ্জন রায় (Manoranjan Ray)। বাবা, কাকা, দাদারা সকলে চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। সেদিক থেকে রায় পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথম কেউ দেশের সেবার কাজে সরাসরি নিজেকে যুক্ত করতে চলেছে। স্বভাবতই, গ্রাম জুড়ে একই সঙ্গে খুশি এবং আতঙ্কের পরিবেশ।
মনোরঞ্জন অবশ্য আত্মবিশ্বাসী। বললেন, "এটা তো আমার স্বপ্ন ছিল। তাছাড়া কাউকে না কাউকে তো দেশ সেবার কাজও করতে হবে। আমি না হয় তাতেই যুক্ত হলাম।"
বাড়ির অদূরেই সীমান্ত। ছোট থেকে সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের দেখে নিজেও বড় হয়ে জওয়ান হতে চেয়েছিল। পরীক্ষা দিয়ে পাশও করে গেছে। ফলে ছেলের ইচ্ছেকে বাধা দেননি বাবা বাবলু রায় ও মা পূণ্যি রায়। বললেন, "একথা ঠিক, যুদ্ধের একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ছেলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে। ফলে ভয় যে নেই তা বলব না, তবে দেশ মাতৃকার চেয়ে বড় আর কে বা হতে পারে। তাই বাধা দিইনি।"
এও বললেন, "চাইলেই তো আর সকলের দেশের সেবা করতে পারে না। আমাদের পরিবারেরও কেউ আগে কখনও সেনাবাহিনীতে কাজ করেনি। সেদিক থেকে ছেলের এই সাফল্য তো আমাদের কাছে গর্বেরও।"
সদ্য ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে মনোরঞ্জনের। বেশ কিছুদিন ধরেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। উচ্চ মাধ্যমিকের পর অগ্নিবীরের পরীক্ষাতেও বসেছিল। সম্প্রতি ঘরে এসে পৌঁছয় নিয়োগপত্র। যুদ্ধের আবহেই শুক্রবার গ্রাম ছাড়ল সে। শেষ মুহূর্তে তাঁকে বীরের সংবর্ধনা জানান গ্রামবাসীরাও। আপাতত গন্তব্য, সেনাবাহিনীর বেঙ্গালুরুর কার্যালয়। আগামী কয়েক মাস সেখানেই অগ্নিবীরের ট্রেনিং নেবে সে।