শেষ আপডেট: 24th July 2023 06:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাস খানেক আগেই কেন্দ্রের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিং প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেন, ‘মণিপুরে সরকার নেই, আইনের শাসন নেই। মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছে।’ তারপর মণিপুরের (Manipur Horror) পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আশু পরিবর্তনের কোনও আভাস নেই। বরং দুই কুকি মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানোর ভিডিও প্রকাশ্যে আসতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এমন অস্থির পরিস্থিতিতে বিজেপি (BJP) তথা মণিপুর সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির এক বিধায়ক।
চলতি হিংসার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের দিকে আঙুল তুলে নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধে হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিজেপির এক জনজাতি বিধায়ক।
একটি সর্ব ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নিজের রাজ্যের চলতি অশান্তি, দুরবস্থা নিয়ে নিবন্ধ লিখেছেন পার্বত্য মণিপুরের বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ। তিনি এবং আরও নয় বিধায়ক ৩ মে অশান্তি শুরুর পর পরই মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে লেখা চিঠিতে পার্বত্য মণিপুরের কুকি জনজাতিদের বসবাসের এলাকা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রসঙ্গত, সেই প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় কুকিরা এখন পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছে।
এদিকে, বিজেপি বিধায়কের নিবন্ধ প্রকাশিত হতেই কংগ্রেস মণিপুরের (manipur violence) মুখ্যমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেছে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম এবং জয়রাম রমেশের বক্তব্য, বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে মণিপুর সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। অবিলম্বে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া দরকার। যদিও বিজেপির তরফে এখনও তেমন কোনও আভাস মেলেনি। যতদিন গড়াচ্ছে, হিংসার নতুন নতুন ঘটনা সামনে আসায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ছে।
বিজেপি বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ চলতি অশান্তির জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের দিকেও আঙুল তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, জাতিসত্তার আন্দোলনকে মুখ্যমন্ত্রী মাদক সন্ত্রাসীদের বিবাদ বলে মন্তব্য করে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে যে ১০ বিধায়ক মে মাসে চিঠিটি লিখেছিলেন, তাঁদের সাতজন বিজেপির। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় হিংসার জন্য দায়ী এবং বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকার কৌশলে তাদের সমর্থন করছে। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন নিজেও মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষ। বস্তুত, মণিপুরের রাজনীতি, প্রশাসনেও আর্থ-সামাজিকভাবে অগ্রসর মেইতেই সম্প্রদায়ের প্রভাব বেশি।
বিজেপির এই জনজাতি বিধায়কের বক্তব্য, কুকি এলাকায় পৃথক প্রশাসন চলতি সমস্যার সমাধান হতে পারে। এই প্রসঙ্গে মণিপুরে সরকারি রাজস্ব এবং অন্যান্য সম্পদ বণ্টন নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, সম্পদ বণ্টনে পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সম্পর্কে এই জনজাতি বিধায়কের অভিযোগ, তিনি কুকি নিধনকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মণিপুর কাণ্ডে নয়া মোড়, ঘটনার তথ্য প্রমাণে ঠাসা মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত পুলিশের