মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস
শেষ আপডেট: 23rd July 2024 14:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিধানসভা অধিবেশনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শাসক দল যে কড়া অবস্থান নেবে সেই দেওয়াল লিখন স্পষ্টই ছিল। মঙ্গলবার সকালে দ্য ওয়ালের প্রতিবেদনে এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে জানানোও হয়েছিল। হলও তাই। মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নাম না করে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের উদ্দেশে বলেন, আপনি লাইনে চলুন, বেলাইনে নয়। আপনি কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করতে পারেন না।
বিধানসভার স্পিকারের কাছ থেকে শপথ বাক্য পাঠ করায় সোমবার দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাঁদের শপথ বৈধ নয়। কারণ, তিনি ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে শপথ নিতে বলেছিলেন। সায়ন্তিকা ও রেয়াতকে দেওয়া চিঠিতে রাজ্যপাল এও বলেন যে, তাঁরা বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিলে ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
রাজ্যপালের সেই পত্রবোমার পাল্টা বিস্ফোরণ ঘটে বিধানসভায়। মুখ্যমন্ত্রী আনন্দ বোসের উদ্দেশে বলেন, “এটা জনতার দরবার, গনতন্ত্রের দরবার। মাননীয় অধ্যক্ষ এই বিধায়কদের যে শপথ পাঠ করিয়েছেন সেটা সর্বসম্মতিক্রমে হয়েছে। যদি কারও আপত্তি থাকে, তাহলে তাঁর বিধানসভায় উপস্থিত থেকে সেটা করা উচিত ছিল।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সংবাদমাধ্যমে দেখেছি, মাননীয় রাজ্যপাল কী বলছেন, আমি এ ব্যাপারে মাননীয় অধ্যক্ষকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি। রাজভবন তো সিলেকটেড অর্থাৎ মনোনীত, বিধানসভা তো ইলেকটেড তথা নির্বাচিত”।
সায়ন্তিকা ও রেয়াতকে জরিমানা করার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি বলব লাইনে চলুন, বেলাইনে চলবেন না। আপনি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত করতে পারেন না। আপনার বিরুদ্ধে পেনাল্টি কে দেবে? পাঁচশ টাকা করে পেনাল্টি করেছেন, এটা তো ব্রিটিশ আইন!”
এখানেই না থেমে মমতা রাজ্যপালের উদ্দেশে বলেন, “আপনার কি টাকার খুব প্রয়োজন আছে? আপনার কি জলপানের জন্য টাকার প্রয়োজন? বলতে পারেন, আমি ব্যবস্থা করে দেব”। এমনকি কটাক্ষ করে বলেন, ‘হেলাও নয়, ঢোঁড়াও নয়। নড়েও না, চড়েও না’।
বিধায়কদের শপথের ব্যাপারে রাজ্যপাল যে অবস্থান নিয়েছেন, তাতে কোনও রাজনৈতিক দলই সমর্থন করছে না। এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি ডেপুটি স্পিকারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ডেপুটি স্পিকার তো বলতেই পারেন যে আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থাকতে এটা করতে পারি না। ডেপুটি স্পিকার সেটাই বলেছিলেন। তিনি অধ্যক্ষের হাতে বিষয়টি ছেড়ে দেন। মন্ত্রীদের শপথ রাজভবনে হয়, কিন্তু বিধায়কদের শপথ সাধারণত বিধানসভাতেই হয়। এটাই রীতি। বিধানসভার যে রুল রয়েছে, সেই রুল অনুযায়ী মাননীয় অধ্যক্ষ সঠিক কাজই করেছেন। সেটাকে খন্ডন করে কোনও স্বৈরাচারী ফর্মুলা প্রয়োগ করা যায় না।