আলিপুরদুয়ারে চা বাগানের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 25th January 2025 08:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রীর পরনে থাকা সাদা জ্যাকেটের মাঝখানে সেফটিপিন আঁটা। দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, জ্যাকেটের চেন কেটে গেছে! গত বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের চা বাগানের সরকারি অনুষ্ঠানের সেই ছবি ভাইরাল!
মুখ্যমন্ত্রী যখন বাঁশের ব্যারিকেডে উঠে জনতার সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলেন তখন এই দৃশ্য দেখে জনতার অনেকেই বিচলিত হয়ে ওঠেন। তবে প্রশাসনিক কর্তারা এতে খুব একটা বিচলিত হননি। তাঁদের কথায়, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনই!'
জ্যাকেটের চেন কেটে গেছে বলে সেফটি পিন লাগিয়ে নিয়েছেন। pic.twitter.com/y3FbFLJQtq
— Sandipan Mitra (@SMitra_) January 24, 2025
প্রশাসনিক কর্তারা মনে করাচ্ছেন, গত বছরের ১৭ মে। লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তর থেকে দক্ষিণ চষে বেড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের গজাশিমূলে নির্বাচনী সভা মঞ্চে আচমকা ছিঁড়ে যায় হাওয়াই চটি। ব্যতিব্যস্ত হয়ে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা-সহ অনেকেই চটি এগিয়ে দিতে গিয়েছিলেন। ইশারায় তাঁদের না করে চেয়ারে বসে ছেঁড়া হাওয়াই চটিতে সেফটিপিন লাগিয়ে পরের সভার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন মমতা।
গত বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের চা বাগানে যেন সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। ইতিমধ্যে মমতার ওই ছবি সাড়া ফেলেছে নেটপাড়ায়। অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সাদামাটা জীবনযাত্রার প্রশংসা করেছেন। তাঁদের মতে, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হয়েও এত সহজ সরল জীবনযাত্রা মেনে চলা বোধহয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই সম্ভব।
অনেকে আবার নিয়োগ দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে সমালোচনা করে বলছেন,মানুষের নজর ঘোরাতেই এসব করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে বঙ্গ রাজনীতির চর্চায় বারে বারে উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাদামাটা জীবনযাত্রার প্রসঙ্গ। ২০২৩ সালের ১৩ মে। কলকাতা সফরে এসে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সাদামাটা জীবনযাত্রা দেখে আপ্লুত হয়েছিলেন বলিউডের দ্বিতীয় খান, মহাতারকা সলমন খান। সলমন একা নন, এর আগে দেশ বিদেশের অনেকেই তৃণমূল নেত্রীর টালির বাড়ি দেখে চমকে উঠেছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এই সাদামাটা জীবন যাত্রা, সহজে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান 'ইউএসপি'। যা তাঁকে সহজেই অন্য রাজনীতিকের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে রাখে।
প্রসঙ্গত, অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মের তরফে প্রতি বছরই দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের আর্থিক স্টেটাস রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। গত বছরের রিপোর্টেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেশের দরিদ্রতম মুখ্য়মন্ত্রী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।