Date : 17th May, 2025 | Call 1800 452 567 | [email protected]
পাক হাই কমিশনের আধিকারিকের সঙ্গে নিজেই ভিডিও পোস্ট করেছিলেন চরবৃত্তিতে অভিযুক্ত জ্যোতি!ছোটবেলার প্রেম ভোলেননি বার্ধক্যেও, বিবাহিতা প্রেমিকাকে নিয়ে পালালেন ৬০-এর আইনজীবীগরমেও ফ্রেশ লুক চাই? ওরিফ্লেমের এই দুই প্রোডাক্টে হবে কেল্লাফতেPregnancy: সন্তান মানে খুশির খবর! হবু বাবার দায়িত্বও অনেক, কীভাবে সামলাবেন? রইল টিপসOperation Sindoor: পাকিস্তানের ৬০০-র বেশি ড্রোন ধ্বংস করেছে ভারতীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমমোবাইলের পাসওয়ার্ড আদানপ্রদান নিয়ে অশান্তি, চর্চায় 'ওপেন ফোন পলিসি,' এটা ভালবাসা বাড়ায় না সম্পর্ক ভাঙে? DA Case: বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ ৬ সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে, পরের শুনানি ৪ অগস্টহার্ট অ্যাটাক! হবু স্ত্রীকে মঙ্গলসূত্র পরিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন যুবক, মর্মান্তিক ঘটনা কর্নাটকেIPL 2025: দরকার মাত্র ৬৭ রান, তাহলেই ‘কিং সাইজ’ রেকর্ড বিরাটেরঅপারেশন সিঁদুর নিয়ে রাহুলের তোপ, বায়ুসেনার কটা যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে?
Mamata Banerjee West Bengal Budget 2024

ভরা ভোটের মধ্যেই বর্ধিত লক্ষ্ণীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকবে অ্যাকাউন্টে, আর যেভাবে কল্পতরু মমতা

বহস্পতিবার রাজ্য বাজেটে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছেন, লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ভাতা বর্তমানের ৫০০ টাকা থেকে দ্বিগুণ করে ১০০০ টাকা হবে। তফসিলি জাতি ও জনজাতি মহিলাদের জন্য এই প্রকল্প খাতে ভাসা ১ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হবে ১২০০ টাকা। এপ্রিল মাস থেকে তা কার্যকর হবে। মে মাসের গোড়া থেকে তা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।

ভরা ভোটের মধ্যেই বর্ধিত লক্ষ্ণীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকবে অ্যাকাউন্টে, আর যেভাবে কল্পতরু মমতা

শেষ আপডেট: 8 February 2024 20:57

দ্য ওয়াল ব্যুরো: তৃণমূলের অভিযোগ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে নাকানিচোবানি খাওয়াতেই বাংলার বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্র। পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন, এই অনুযোগ বহুলাংশে সত্য। কিন্তু সেই কঠিন পরিস্থিতিকেই তাঁর অ্যাডভান্টেজ করে রাজ্য বাজেটে ব্রহ্মাস্ত্রের আয়োজন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় বিজেপি নেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করেন যে একুশের ভোটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের প্রতিশ্রুতিই তৃণমূলের জন্য অনুঘটকের কাজ করেছিল। একে তো বাংলার মেয়েদের মধ্যে মমতার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তার উপর নগদে মাসে ৫০০ টাকার হাতছানি ম্যাজিকের মতো কাজ করেছিল। 

বহস্পতিবার রাজ্য বাজেটে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছেন, লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ভাতা বর্তমানের ৫০০ টাকা থেকে দ্বিগুণ করে ১০০০ টাকা হবে। তফসিলি জাতি ও জনজাতি মহিলাদের জন্য এই প্রকল্প খাতে ভাসা ১ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হবে ১২০০ টাকা। এপ্রিল মাস থেকে তা কার্যকর হবে। মে মাসের গোড়া থেকে তা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।

মে মাসে গোড়া মানে লোকসভা ভোট তখন মধ্যগগণে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের যা পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। সাত বা আট দফায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে মে মাসের দ্বিতীয় বা ত়ৃতীয় সপ্তাহে। অর্থাৎ লোকসভা ভোটের মধ্যে একে তো লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার নিয়ে প্রচার চালাবে তৃণমূল। তার উপর মে মাসের গোড়ায় যখন বাংলার ২ কোটি মহিলার অ্যাকাউন্টে যখন টাকা ঢুকবে তখনও অন্তত তিন থেকে চার দফার ভোট গ্রহণ বাকি থাকবে। ২ কোটি মহিলার অর্থ প্রায় ২ কোটি পরিবার। অর্থাৎ সরাসরি বেনিফিসিয়ারি প্রায় ৮ কোটি মানুষ। 

বড় কথা হল, এই প্রাপ্তির আগেও একটা প্রাপ্তি আছে। তা হল, ফেব্রুয়ারি মাসে একশ দিনের প্রকল্পে কমবেশি ২১ লক্ষ শ্রমিক তাঁদের বকেয়া মজুরি পাবেন। এই ২১ লক্ষ শ্রমিক মানে সরাসরি বেনিফিশিয়ারি প্রায় ১ কোটি মানুষ। যাঁরা এই মাসেই বকেয়া পাওনা বাবদ কেউ কেউ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকাও পেয়ে যেতে পারেন। 
মহিলা ও শ্রমিকদের পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জন্য বড় ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্য বাজেটে। তাতে বলা হয়েছে, বছরে যে দু’মাস তাঁদের কাজ থাকে না, সেই সময়ে মাসে ৫ হাজার টাকা করে তাঁদের দেবে সরকার। ডায়মন্ড হারবার এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ এই প্রকল্প খাতে উপকার যে পাবেন, এতক্ষণে সেই খবর হয়তো অনেকের কাছে চলে গেছে। 

পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশদের মাসিক বেতন ১ হাজার টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা হয়েছে বাজেটে। সিভিকদের শাসক দলের প্রতি বিশেষ আনুগত্য রয়েছে বলে বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এও অভিযোগ যে তাঁরা শাসক দলের ক্যাডারের মতো কাজ করেন। সে যাই অভিযোগ থাক, ১ হাজার টাকা ভাতা বাড়ার খবর, তাঁদের উৎসাহিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

বাজেটে মিড মিলের রাঁধুনিদের জন্য মাসে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা, শিক্ষানবীশ যুবকদের জন্য মাসে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা স্টাইপেন্ডের মতো ঘোষণাও হয়েছে। তা ছাড়া কঠিন আর্থিক পরিস্থিতির মধ্যেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ্য ভাতা মে মাস থেকে আরও ৪ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা হয়েছে বাজেটে। 
সব মিলিয়ে রাজ্য বাজেটে যেন কল্পতরু হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুটি সেতু ছাড়া বড় পরিকাঠামো নির্মাণের ঘোষণা বাজেটে নেই ঠিকই। কিন্তু যা আছে তা শাসক দলকে অক্সিজেন যোগানোর জন্য যথেষ্ট বলে তৃণমূলের নেতারা মনে করছেন। 

ভোটের আগে মমতার এই মাস্টারস্ট্রোক বিরোধীরা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন কিনা স্পষ্ট নয়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বাজেট ঘোষণার পর বিজেপি ও বামেরা বলছেন, এই খয়রাতি করতে গিয়ে রাজ্যের আর্থিক অবস্থাকে আরও রসাতলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

কিন্তু পর্যবেক্ষকদের মতে, এই প্রচারও মমতার জন্য ইতিবাচক হতে পারে। কারণ, এতে মমতার কথাই প্রতিষ্ঠিত হবে যে উত্তরাধিকার সূত্রে বামেদের থেকে তিনি যে বেহাল কোষাগার পেয়েছেন, তাতে বড় কিছু করা মুশকিল ছিল। উপরি বরাদ্দ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তার পরেও তো গ্রামের মহিলাদের, শ্রমিকদের টাকা দিতে পারছে সরকার। কিন্তু এখন দেখার এই সব ঘোষণা সত্যি সত্যিই লোকসভা ভোটে সোনা ফলাতে পারে কিনা।


ভিডিও স্টোরি