মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 21 April 2025 08:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অবশেষে ১৭ বছরের প্রতীক্ষার অবসান।
সিমেন্ট কারখানার পর এবার শালবনিতে ১৬ হাজার কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে ৮০০ মেগা ওয়াট করে দু’টি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করছে জিন্দল গোষ্ঠী (Jindal Power Plant)। সোমবার দুপুরে যার শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও (Sourav Ganguly)। থাকবেন জিন্দল কর্তারাও।
স্বভাবতই, শালবনি জুড়ে খুশির আমেজ। কর্ম সংস্থানের আশায় বুক বেঁধেছেন স্থানীয়রা। জমিহারা কমিটির সম্পাদক পরিষ্কার মাহাতর কথায়, "এখনও কিছু দাবি পূরণ হয়নি, তবে কারখানাটা যে অবশেষে হচ্ছে, স্থানীয় কিছু ছেলে মেয়ে কাজ পাবে, এটাই বড় কথা।"
২০০৭ সাল থেকে শিল্পের স্বপ্ন দেখছে শালবনি। বাম আমলে জমি অধিগ্রহণ হলেও স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এর আগে জমিহারাদের বিক্ষোভের পর অধিগৃহীত জমির একাংশে ২০১৬ সালে তৈরি হয়েছিল সিমেন্ট কারখানা। তবে তারপরও অধিগৃহীত জমির প্রায় ৮০ শতাংশ পড়ে ছিল। অবশেষে সেই জমিতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠছে। তাকে ঘিরে আরও একাধিক অনুসারী শিল্পও গড়ে উঠবে। যার হাত ধরে এলাকার আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির বদল ঘটবে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
শালবনিতে জিন্দলদের ইস্পাত কারখানার জন্য বাম জমানায় সরকারি, রায়তি ও পাট্টা জমি মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর ওই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী, প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠান সেরে শালবনি থেকে মেদিনীপুরে ফেরার পথে ভাদুতলায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে অল্পের জন্য মাওবাদীদের মাইন বিস্ফোরণের হাত থেকে রক্ষা পান বুদ্ধবাবু-সহ দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ওই ঘটনার জেরে সেসময় কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এরপরই লালগড়ের নিরীহ মহিলাদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জঙ্গলমহল। থমকে যায় জিন্দল প্রকল্প। ২০১১ সালে পালাবদলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে জঙ্গলমহলে ফিরেছে শান্তি। দেরিতে হলেও জিন্দলদের সেই জমিতে পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস ঘিরে নতুন করে কর্মসংস্থানের আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয়রা। মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, তা নিয়েও কৌতূহলী স্থানীয়রা।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার কালবৈশাখীর দাপটে অনুষ্ঠানস্থলের হ্যাঙ্গার ভেঙে পড়েছিল। সোমবারও কালবৈশাখীর আশঙ্কা রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে জেলা প্রশাসন। শক্তপোক্তভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অনুষ্ঠান মঞ্চ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার রাতে মেদিনীপুরের সার্কিট হাউসে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরের দিন মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তারমধ্যে অন্যতম গোয়ালতোড়ের সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট। ওই মঞ্চ থেকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে উপভোক্তাদের সরকারি সুবিধা বিতরণও করবেন মুখ্যমন্ত্রী। শালবনি এবং মেদিনীপুর শহরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।