ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 23rd July 2024 19:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শ্রীভূমির দুর্গাপুজোর ভিড় নিয়ে অভিযোগের পাহাড় গত কয়েক বছর ধরেই জমছে। শহরের অন্য প্রান্ত থেকে ওই পথ দিয়ে যদি কেউ এয়ারপোর্ট পৌঁছতে চান পুজোর সময়ে, তাহলে তাঁর ফ্লাইট মিস হওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা। উল্টোডাঙা থেকে শুরু করে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত পথ, কয়েক ঘণ্টাও অবরুদ্ধ হয়েছে, গত বছর পুজোয়। এবার এই নিয়ে আগে থেকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি বললেন, 'সুজিতের শ্রীভূমির পুজোর জন্য এয়ারপোর্টের রাস্তা পুরো জ্যাম হয়ে যায়।'
আজ, মঙ্গলবার ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে প্রাক-পুজো বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি পুজো-সংক্রান্ত সমস্ত সাবধানতা ও সচেতনতার কথা খতিয়ে ব্যাখ্যা করেন। তা করতে গিয়েই উল্লেখ করেন, পুজো উপলক্ষে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে মানুষের প্রবল ভিড় হয়, মানুষ বিপদে পড়ে। এ কথা বলতে গিয়েই তিনি উল্লেখ করেন, সুজিত বসুর শ্রীভূমির পুজোর জন্য এয়ারপোর্টের রাস্তা পুরো জ্যাম হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, তিনি সেই উদাহরণ টেনে বলেন, উত্তর কলকাতার কিছু বিশেষ পুজোর ক্ষেত্রেও এমনটা হয়ে থাকে। এরকম সমস্যা তৈরি হলে, সংশ্লিষ্ট পুজোগুলিকে 'ব্ল্যাকলিস্টেড' করে দেওয়া হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুজো বৈঠকে অনুদান বদ্ধির কথাও ঘোষণা করেন, ক্লাবগুলিকে ৭০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে জানান। ঘোষণা করেন, পরেরবার এই টাকা বাড়িয়ে এক লক্ষ করে দেবেন বলেও। ফায়ার এবং ইলেকট্রিসিটিতে ছাড়ের কথাও ঘোষণা করেন।
তবে কেবল অনুদানের কথা নয়, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের অনেকটা অংশই ছিল, নিরাপদে পুজো করার পরিকল্পনা। তিনি বলেন, 'এখন পুজোর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বাংলাতেই এবার ৪৩ হাজারের বেশি পুজো হচ্ছে ক্লাব কমিটিগুলির তরফে। এবার একটু আগে পুজো, তাই আগে মিটিং করছি। পুজোয় যাতে কোনও অঘটন না ঘটে, সরকার সহযোগিতা করবে। ক্লাবগুলির কাছেও সহযোগিতা আশা করি। পুলিশ যেন শহর থেকে গ্রাম নজর রাখে, ট্রাফিক মুভমেন্ট যাতে ঠিক থাকে। জেলাগুলোতেও বড় বড় পুজো হয়। সমন্বয় করতে হবে ঠিকমতো।'
পুজোর আনন্দে তাঁর নিজের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন মমতা। বলেন, 'মহালয়ার আগে থেকে আমিই পুজোগুলো উদ্বোধন করে দিই, সকলে বেরিয়ে পড়েন। আনন্দ করেন। আমাদের এখানে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। একটা সমন্বয়ের মিলনক্ষেত্র এই পুজো। আমরা বড়দিন থেকে ছটপুজো- সবেতে ছুটিও দিই।'
আনন্দের পাশাপাশিই পুজোয় সবরকম নিরাপত্তা নিয়ে বারবার সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'কোনও দুর্ঘটনা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কেউ একটা এমন বড় প্যান্ডেল করে দিলেন, হাজার হাজার লোক হল, তাতে পদপিষ্ট যেন কেউ না হন, সেটা দেখতে হবে। এক একটা প্রাণ খুব জরুরি।'
তাঁর পরামর্শ, 'পুজো ফোরাম কমিটিকে ইনভলভ করুন। ক্লাবগুলির মধ্যে সমন্বয় করে সহযোগিতা করবে পুলিশকে। কন্ট্রোল রুমগুলি যেন ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকে। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে হবে। এন্ট্রি-এক্সিট যথেষ্ট রাখতে হবে, যাতে লোকে বেরিয়ে যেতে পারে কোনও বিপদ ঘটলে।'
পাশাপাশি তিনি বলেন, 'হাসপাতালে জায়গা রাখতে হবে। এলাকার ডাক্তার-নার্সদের কাজে লাগাতে হবে, হঠাৎ কিছু হলে তাঁরা সাহায্য করতে পারবেন। বিসর্জনের জায়গায় ব্যারিকেড করতে হবে, আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। এমার্জেন্সির জন্য তৈরি থাকতে হবে। হাতের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স রাখতে হবে। হেল্পলাইন নম্বরগুলি যেন কাজ করে, আইটি দফতরকে দেখতে হবে। পুজোকে নিরাপদ করতে হবে সকলের সহযোগিতায়।'