শেষ আপডেট: 12th February 2025 18:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহাকুম্ভে ইতিমধ্যে একাধিক বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তো আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, পদপিষ্টের ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়। তবে সেই সংখ্যা আদৌ কতটা সত্যি তা নিয়েই কার্যত প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুললেন, 'কত মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে কে জানে?'
বুধবার পেশ হয়েছে রাজ্য বাজেট। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কুম্ভমেলায় ভিআইপিদের জন্য এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল যে সাধারণ মানুষই যেতে পারছিল না। আর যারা গেছেন তাঁদের অনেক জনের মৃত্যু হয়েছে। আমি টিভিতে দেখেছি লক্ষ লক্ষ জুতো গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কত মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে আমি তো জানি না। আমি শুধু জানি, কোভিডের সময়ে অনেক মৃতদেহ বিহারে, বাংলায় মিলেছিল। সেগুলি ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।'
মমতার অভিযোগ, বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলে পরপর কমিটি, কমিশন চলে আসে। উত্তরপ্রদেশে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল সেখানো কোনও কমিশনই যায়নি। তিনি দাবি করেন, মহাকুম্ভে আদতে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা কেউ জানে না। কারও কাছে কোনও তথ্য নেই। মমতা বলেন, 'সাংবাদিকদের ২৪ ঘণ্টা প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। মেলা চত্বরের ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কত হাজার জন মারা গেছেন, কারও কাছে সঠিক তথ্যই নেই।' মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আদতে উত্তরপ্রদেশ সরকার ব্যর্থতা বলেই নিশানা করেছেন মমতা।
কুম্ভে গিয়ে বাংলার একাধিক পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কলকাতার বাসিন্দাও ছিলেন। মৃতার পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন ময়নাতদন্ত তো করেইনি, সঠিক কোনও নথিও দেওয়া হয়নি। মমতা এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, রাজ্য সরকারের তরফে ময়নাতদন্ত করে দেওয়া হয়েছে, যাতে মৃতার পরিবার ডেথ সার্টিফিকেটটা পেতে পারে। মমতার অভিযোগ, মহাকুম্ভ থেকে একটি চিরকুট ধরানো হয়েছিল। তাতে কোনও তথ্য ছিল না, কোনও সই ছিল না। এমনকী, কীভাবে মৃত্যু তাও লেখা ছিল না। কেউ হার্ট অ্যাটাক বলতেই পারেন। স্পষ্ট বোঝা গেছে, ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার জন্যই বিষয়টি লুকিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শাহি স্নান করতে গিয়ে প্রবল ভিড়ে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল কুম্ভে। সেই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, 'আমি শিখেছি, ভিড় করে পুণ্য অর্জন করতে আসা মানুষদের জীবন যেখানে জড়িয়ে আছে, সেখানে পরিকল্পনা আর ব্যবস্থাপনাই শেষ কথা।'