মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: 12th April 2025 14:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ওয়াকফ সংশোধন আইনকে (Waqf Bill) কেন্দ্র করে বাংলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে যে অশান্তি ও গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হয়েছে তা নিয়ে এবার সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার বারবেলায় এ ব্যাপারে প্রথমে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমার। তিনি পষ্টাপষ্টি বলেন, কোনও গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না। তার পরপরই সমাজ মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বার্তা দেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনও অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যাঁরা করছেন তাঁরা সমাজের ক্ষতি করছেন।"
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে।"
সবার কাছে আবেদন
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 12, 2025
সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন।
মনে রাখবেন, যে…
ওয়াকফ সংশোধন বিল সম্প্রতি সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সইয়ের পর তা এখন পুরোদস্তুর আইনে পরিণত হয়েছে। ওই সংশোধিত আইনের প্রতিবাদেই বাংলায় সংখ্যালঘুদের একাংশ বিক্ষোভের নামে হিংসা ও অশান্তির পথ নিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। তা নিয়ে কেউ কেউ আবার সমাজ মাধ্যমে বিকৃত তথ্য ছড়াতেও শুরু করেছে। ফলে পরিস্থিতি কিছুটা জটিল হয়েছে।
ঠিক এই পরিস্থিতিতেই শনিবার মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিংসা ও অশান্তি প্রশমিত করতে তিনি পরিষ্কার ভাবে বলেছেন, "আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি- আমরা এই আইনকে সমর্থন করি না। এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কীসের?"
যারা অশান্তি ছড়াচ্ছে তাদের উদ্দেশে কড়া বার্তাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “আরও মনে রাখবেন, দাঙ্গায় যাঁরা উস্কানি দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেব। কোনও হিংসাত্মক কার্যকলাপকে আমরা প্রশ্রয় দিই না।"
এ ব্যাপারে নাম না করে বিজেপিকেও কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন- এই আমার আবেদন।"
মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "এ হল সরকারের মদতপুষ্ট অশান্তি। এই হিংসার আগুন ছড়াতে সরকারি দল উস্কানি ও উৎসাহ দিয়েছে। এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে শান্তির কথা বলছে। আমরা কেন্দ্রের কাছে দাবি করছি, অবিলম্বে উপদ্রুত এলাকায় সংবিধানের ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করা হোক। কারণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শুধরোনোর কোনও সদিচ্ছা রাজ্য পুলিশের নেই।"