Advertisement
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement
শেষ আপডেট: 19 April 2025 23:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে দাঙ্গা পরিস্থিতির জন্য এ বার সরাসরি সঙ্ঘ পরিবার তথা আরএসএস-কে দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।শনিবার রাতে রাজ্যবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলা যেতে পারে এ হল গত প্রায় ১৫ বছরে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর প্রথম খোলা চিঠি। সেই চিঠিতে তিনি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, “বিজেপি ও তাদের সঙ্গীরা পশ্চিমবঙ্গে হঠাৎ করে খুব আক্রমণাত্মক হয়েছে। এই সঙ্গীদের মধ্যে আরএসএস-ও আছে”।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমি আগে আরএসএসের নাম নিইনি, কিন্তু এবার বাধ্য হয়েই বলতে হচ্ছে যে, রাজ্যে যে কুশ্রী মিথ্যার প্রচার চলছে তার মূলে তারাও আছে”। মমতার অভিযোগ, বাংলায় ডিভাইড অ্যান্ড রুলের খেলা খেলতে চাইছে বিজেপি ও আরএসএস। এ খেলা বিপজ্জনক।
.@MamataOfficial র আবেদন। pic.twitter.com/fXdbS5OsYX
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) April 19, 2025
মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের জবাব আরএসএস এখনও দেয়নি। তবে বিজেপি পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদের নামে সমাজের একটা অংশকে আগুন নিয়ে খেলতে দিয়েছে তৃণমূল সরকারই। মুর্শিদাবাদে হিন্দুরা সে কারণেই বিপন্ন হয়েছে। রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা দিতে না পারায় শেষমেশ কেন্দ্রীয় বাহিনী নামাতে হয়েছে।
আবার মুখ্যমন্ত্রীর এ কথার পাল্টা সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী ও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। দুজনেরই বক্তব্য, “বাংলায় আরএসএস-বিজেপিকে ঢুকিয়েছেন মমতাই। যে বিপজ্জনক খেলার কথা উনি বলছেন, তার বীজ বপন করেছেন উনিই”।
তবে অনেকের মতে, এই চাপানউতোরের বাইরে প্রশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা উদ্বেগও খোলা চিঠিতে ধরা পড়েছে। তিনি হয়তো আশঙ্কা করছেন, মুর্শিদাবাদে যে বিক্ষিপ্ত হিংসা বা অশান্তির ঘটনা ঘটেছে তার স্ফুলিঙ্গ নিয়ে অন্য জায়গাতেও আগামী দিনে আগুন লাগানোর চেষ্টা হতে পারে। গুজব ও মিথ্যা ছড়িয়ে সমাজে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভাজন তীব্র করার চেষ্টা হতে পারে। সেই কারণে এদিন খোলা চিঠিতে বার বার শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বাংলায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিভাজনের রাজনীতির কৌশল নিয়েছে বিজেপি। প্রথমে ঠিক করেছিল রাম নবমীকে কেন্দ্র করে অশান্তি পাকাবে। কিন্তু রাম নবমী শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হয়েছে। তাই এবার ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে সংঘটিত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কিছু বিষয়কে ব্যবহার করতে চাইছে।
বাংলায় গত তিনটি মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। একটানা পনেরো বছর সরকারে থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরি হয়েছে। তার কিছুটা আঁচ দেখা গিয়েছে আরজি কর আন্দোলনের সময়ে। এর উপর তীব্র ধর্মীয় মেরুকরণ হলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সার্বিক এই পরিস্থিতিতে মেরুকরণ ঠেকিয়ে নিজেদের প্রাসঙ্গিক করে রাখতে চেষ্টা করছে সিপিএমও। রবিবার তাদের ব্রিগেডে সভা রয়েছে। তবে সেই সভা আদৌ কোনও গতিপথ দেখাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
Advertisement
Advertisement