শেষ আপডেট: 22nd July 2024 19:28
রবিবার ধর্মতলার মঞ্চ থেকে সংগঠনে যে রদবদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তা নিয়ে তৃণমূলের ভিতরমহল এখনও আলোড়িত। কী কী হতে পারে এবং কেন হতে পারে তা নিয়ে দলের যুব ও ‘মাদার’ দুই সংগঠনের মধ্যে জল্পনা ও কল্পনা মিলেমিশে যাচ্ছে।
এহেন পরিস্থিতিতে কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এবার সরকার ও সংগঠনে রদবদল হবে কয়েকটি ধাপে বা পর্যায়ে। অর্থাৎ তা একবারে হবে না। শুধু তা নয়, এই রদবদল হতে পারে সংগঠনের সব স্তরে। অর্থাৎ ব্লক, জেলা ও রাজ্য সংগঠন—সর্বস্তরে এই সাংগঠনিক রদবদল হতে পারে।
সবচেয়ে বেশি বদল হতে পারে উত্তরবঙ্গে। তার একটা নমুনা বা ইঙ্গিত রবিবার একুশের মঞ্চে দেখা গেছে। কোচবিহারের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবকে মঞ্চে ওঠার ‘পাস’ দেওয়া হয়নি। শেষমেশ সুব্রত বক্সীর কাছে কাকুতিমিনতি করে তবু অনুমতি পেয়েছিলেন গৌতম। রবীন্দ্রনাথ তাও পাননি। উত্তরবঙ্গে প্রায় সব জেলারই জেলা সভাপতি বদল করা হতে পারে। সেই সঙ্গে ব্লক স্তরেও বহু নেতাকে সভাপতির পদ থেকে সরানোর সম্ভাবনা ষোল আনা।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, জেলা সভাপতি বদলের ক্ষেত্রে একটা ফর্মুলা নিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হল, যাঁরা সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের আর জেলা সভাপতি পদে রাখা হবে না। এই সূত্রে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হতে পারে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রকে। একই ভাবে মুর্শিদাবাদ জেলার সাংগঠনিক সভাপতির পদ থেকে সরানো হতে পারে আবু তাহেরকে। তা ছাড়া উত্তর কলকাতার সভাপতি পদ থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এবার সরানোর সম্ভাবনা খুব বেশি।
ঠিক একই যুক্তিতে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদ থেকে অরূপ চক্রবর্তীকেও সরানো হবে বলে খবর। সম্ভবত এই ফর্মুলা দেখিয়েই দলের যুব সংগঠনের সভানেত্রী পদ থেকে সরানো হতে পারে সায়নী ঘোষকে। তা ছাড়া সায়নীর এই পদে তিন বছর হয়েও গেছে।
দক্ষিণবঙ্গে আরও কয়েকটি সাংগঠনিক জেলায় বদল অনিবার্য বলে মনে করা হচ্ছে। যেমন কাঁথি ও তমলুক—এই দুই সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি বদল করা হতে পারে। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলারও সভাপতি বদল করা হতে পারে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, জেলায় বড় সমস্যা হল অনেক জেলা সভাপতি নিজের গোষ্ঠীকে নিয়ে চলেন। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলেন না। নতুন সভাপতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এমন মুখ তুলে আনা হবে যাঁর জেলায় ও জেলা সংগঠনের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সেই সঙ্গে কর্তৃত্বের সঙ্গে পূর্ণ সময় দিয়ে সংগঠন চালাতে পারেন। কারণ, মনে রাখতে হবে বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এই রদবদল করা হবে। তাই প্রোডাক্টিভ টিম তৈরি করতে চান অভিষেক।