শেষ আপডেট: 26th February 2024 20:13
রফিকুল জামাদার
একশ দিনের কাজে বাংলার ২১ লক্ষ শ্রমিকের মজুরি বকেয়া ছিল। কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় তা এতদিন ধরে আটকে রয়েছে। সোমবার থেকে সেই বকেয়া টাকা দেওয়া রাজ্য সরকার নিজেই দেওয়া শুরু করে দিল। শুধু সন্দেশখালির ৫৮০০ জন শ্রমিক বকেয়া মজুরি পেলেন সরকারের থেকে।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, ৫৮০০ জন শ্রমিককে বকেয়া মজুরি বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। ওই টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে।
সন্দেশখালি জমি দখল নিয়ে সম্প্রতি যে অশান্তি শুরু হয়েছে তা হচ্ছে মূলত ২ নম্বর ব্লকে। এই ৫৮০০ জন শ্রমিক সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকেই কাজ করেছেন বলে পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর। সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের আলাদা হিসাব রয়েছে।
নবান্নের এক কর্তার কথায়, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে সন্দেশখালিতে পুলিশ, প্রশাসন ও শাসক দলের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের একটা বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে। একটা অনাস্থার পরিবেশ কাজ করছে। অর্থাৎ প্রশাসন ও পুলিশের মাধ্যমে আস্থা ফেরানোই এখন অগ্রাধিকার। সেদিক থেকে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দেওয়ার ব্যাপারটি ইতিবাচক অনুঘটক হিসাবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুধু বকেয়া মজুরি দেওয়া নয়, সন্দেশখালিতে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প খুলে হাতে হাতে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকে স্থানীয় মানুষের বড় অভিযোগ হল, শেখ শাহজাহান ও তার ভাই সিরাজউদ্দিন জোর করে জমি দখল করে ভেরি বানিয়েছে। মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগের পাশাপাশি জমি দখলের অভিযোগ সাম্প্রতিক অস্থিরতার বড় কারণ। এই অবস্থায় সন্দেশখালিতে দুয়ারে সরকার শিবির খুলে সরকার অভিযোগ নেওয়া শুরু করেছে। তার পর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের অফিসাররা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ল্যান্ড রেকর্ড চেক করে জমি ফেরত দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ৬৫ জনকে জমির মালিকানা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, সন্দেশখালি এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা দিতে স্থানীয় ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসেও ক্যাম্প খোলা হচ্ছে। এ সপ্তাহের মধ্যে এলাকার ১২০০ জনকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। সবমিলিয়ে সন্দেশখালিতে চার-পাঁচটি অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক বাড়াতে এখন উঠে পড়ে লেগেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। এরই পাশাপাশি শেখ শাহজাহান ও সিরাজউদ্দিনকে গ্রেফতারের ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে শাসক দলের তরফে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সোমবার খোলাখুলিই দাবি করেছেন, সাত দিনের মধ্যেই গ্রেফতার হয়ে যাবে শেখ শাহজাহান।