শেষ আপডেট: 15th December 2024 02:51
শনিবাসরীয় সন্ধেয় সবচেয়ে বড় খবর হল, ‘বাংলার বাড়ি’ (Banglar Bari) তথা পশ্চিমবঙ্গ আবাস যোজনার (Banlar Awas Yojana) টাকা অবশেষে জেলায় পৌঁছল। অর্থাৎ রাজ্যের অর্থ দফতর প্রতিটি জেলায় উপভোক্তার সংখ্যার ভিত্তিতে যোজনা খাতে টাকা পাঠিয়ে দিল।
এখন প্রশ্ন হবে কবে থেকে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে? সেই উত্তর সন্ধানের আগে বুঝে নেওয়া প্রয়োজন, শনিবারের এই ঘটনা কেন সবচেয়ে বড় খবর? কারণ দুটি। এক, রাজ্যের ১২ লক্ষ পরিবার তথা প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যৎ এর সঙ্গে জড়িয়ে। রাজ্যের এই প্রান্তিক মানুষগুলো অবশেষে তাঁদের মাথায় পাকা ছাদ পাবেন। দুই, কোনও রাজ্য সরকার এর আগে নিজের কোষাগার থেকে এত বড় প্রকল্পের ঝুঁকি নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা খাতে কেন্দ্র ৬০ শতাংশ অর্থ দেয়। রাজ্য দেয় ৪০ শতাংশ। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার যেহেতু আবাস যোজনা খাতে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ ২০২২ সাল থেকে বন্ধ করে রেখেছে, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থির করেন, এই খাতে ১০০ শতাংশ টাকাই রাজ্য দেবে।
আগে হিসাব করা হয়েছিল, ১১ লক্ষ ৩২ হাজার পরিবারকে এই খাতে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু এখন এত বেশি আবেদন জমা পড়েছে যে সংখ্যাটা বাড়িয়ে প্রায় ১২ লক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অর্থ দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতো জেলায় টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁর কাছেই একটা তারিখ চাওয়া হয়েছে। যেদিন তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই টাকাটা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবেন। মঙ্গলবার থেকে পৌষ মাস পড়ে যাচ্ছে। তার আগে সোমবারই তিনি সেটা করবেন কিনা জানা যায়নি। ওনার সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় রয়েছে অর্থ ও পঞ্চায়েত দফতর। তবে যাই হোক, ২৫ ডিসেম্বর বড় দিনের আগে অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রের মতে, টাকা দেওয়ার আগে কোনও আনুষ্ঠানিকতা থাকবে কিনা তা সঙ্গত কারণেই জানতে চাওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কারণ, কেন্দ্র এই খাতে টাকা বন্ধ করার পর রাজ্য সরকার ঝুঁকি নিয়ে পুরো টাকাটা দিচ্ছে। রাজ্যে শাসক দল ছাব্বিশের ভোটের আগে এটা প্রচারে বড় অস্ত্র করতে পারে। তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে যে মুখ্যমন্ত্রী কোনও অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে টাকা দেওয়ার ব্যাপারটার শুভারম্ভ করবেন।
আবাস যোজনা খাতে রাজ্যকে ৪০ শতাংশ খরচ বহন করতে হলেও, সেই টাকায় তৈরি বাড়ির উপর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ফলক লাগাতে হয়। এবার যেহেতু রাজ্যই পুরো টাকা দিচ্ছে তাই, প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলার বাড়ি’।
তবে সূত্রের মতে, একদিক থেকে এটা যেমন বড় খবর, তেমনই বড় চ্যালেঞ্জের মুখেও রয়েছে সরকার। কারণ এই টাকার সুষ্ঠুবন্টন, সে ব্যাপারে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, নিচুতলায় এক শ্রেণির উপদ্রব বন্ধ করা—এগুলোর উপরেও নজর রাখতে হবে।