শেষ আপডেট: 23rd July 2024 17:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রতিবারের মতো এবারও ক্লাবগুলিকে নিয়ে প্রাকপুজো প্রস্তুতি বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই বৈঠকে ঘোষণা করলেন পুজো অনুদান বাড়ানোর কথা। জানালেন, এই বছর রাজ্যের ক্লাবগুলি দুর্গাপুজো আয়োজনের জন্য ৮৫ হাজার টাকা করে অনুদান পাবে সরকারের তরফে। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় ১৫ হাজার করে বাড়ানো হল টাকা।
এবারে ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী। অর্থাৎ হাতে মাত্র ৭৮ দিন! বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে ঘিরে ইতিমধ্যে কলকাতা থেকে জেলা ক্লাবগুলির মধ্যে পুজো প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশির হাওয়া বয়ে গিয়েছে ক্লাবগুলিতে।
মঙ্গলবারই দেশজুড়ে আর্থিক বাজেট পেশ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে লাগামছাড়া দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির জেরে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। সেক্ষেত্রে এবারের বৈঠকে ক্লাবগুলির বিশেষ কৌতূহল ছিল, অনুদানের পরিমাণ একই থাকবে নাকি বাড়বে। অনুদানের অঙ্ক বাড়ানো হলে সুবিধা হবে বলেই একান্ত আলোচনায় জানিয়েছিলেন বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তারা।
আজ যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুদানের অঙ্ক ঘোষণা করছিলেন, তখনই বৈঠক থেকে আওয়াজ ওঠে, এক লাখ টাকার। কিন্তু তা নাকচ করে দিয়ে ৮৫ হাজারের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ধাপে ধাপে বাড়াতে হবে। আগামী বছর এক লক্ষ টাকা করে দেবেন বলেও জানান তিনি।
২০১১ সালে রাজ্যের তখতে বসার পর থেকেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোয় অনুদান ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে ২৫ হাজার টাকা অনুদান ঘোষণা করে সরকার। করোনার সময় থেকে অনুদান বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়। ২০২২ এবং ২০২৩ সালে আরও ১০ হাজার টাকা বাড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গতবারে ক্লাবগুলি পেয়েছিল ৭০ হাজার টাকা করে অনুদান।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার অনুদান ঘোষণার পর থেকে পুজো ঘিরে অতীতে যে চাঁদার জুলুম দেখা যেত তা বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যের অনুদানের টাকায় বিভিন্ন ক্লাব থিমের প্রতিমা, মণ্ডপ গড়েন। সেই সূত্রে দুর্গা পুজোকে ঘিরে ইউনেস্কো থেকে সেরার শিরোপাও পেয়েছে বাংলা।
অতীতে এ ব্যাপারে মামলাও গড়িয়েছিল আদালতে। যদিও আদালতে সেই মামলা টেকেনি। কারণ, আদালতে রাজ্য জানিয়েছিল, দুর্গাপুজোর সঙ্গে বাংলার মানুষের আবেগ, সংস্কৃতি জড়িয়ে রয়েছে। অনুদান বন্ধ করে দিলে অনেক পুজো কমিটির পক্ষেই বাংলার এই সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে।
এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রয়েছে। তাঁর মতে, বাংলার দুর্গাৎসব কেবল একটা পুজো নয়। ইউনেসকো একে দ্য ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মর্যাদা দিয়েছে। পুজোর সময়ে বাংলায় ছোট, বড়, মাঝারি শিল্প অন্তত চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করে। তাতে সাড়া বছর ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষের সংসার চলে। সুতরাং এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার দায় সরকারেরও রয়েছে। তা ছা়ড়া পুজো কমিটিগুলো সারা বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক করে। তাদেরও উৎসাহ দেওয়া দরকার।
আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি গত বছর পুজো কমিটিগুলোকে ফায়ার লাইসেন্স মকুব করা হয়েছিল, বিদ্যুৎ মাশুলে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এবারও সেগুলি বজায় রয়েছে। তার উপরে বিদ্যুতে ছাড় বাড়ানো হয়েছে খানিকটা, ৬৬ থেকে ৭৫ শতাংশ।