শেষ আপডেট: 21st February 2024 17:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত লোকসভা ভোটের সময়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করে ফেলেছিলেন কোনও বিধায়ক বা মন্ত্রীকে লোকসভার টিকিট দেওয়া হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অবস্থানে টিকে থাকা যায়নি। ভোটের বেশ কিছুদিন আগে হঠাৎ তাঁর মনে হয়েছিল, তৎকালীন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে লোকসভায় প্রার্থী করা যেতে পারে। এবং তা বাঁকুড়া আসন থেকে।
যে সময়ে দিদির মাথায় এই চিন্তা আসে, তখন সুব্রতবাবু কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। তবে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দিদির দূত হয়ে দলের এক মুখপাত্র তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করতে গিয়েছিলেন। প্রস্তাব শুনেই হ্যাঁ করে দেন তৎকালীন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই খবর তখন একমাত্র দ্য ওয়ালেই প্রকাশিত হয়েছিল। সুব্রতবাবু উনিশের লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া থেকে লড়ে অবশ্য হেরে গিয়েছিলেন।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, শেষমেশ মতের কোনও পরিবর্তন না হলে এবারও তেমনই ব্যতিক্রম ঘটতে পারে। তণমূলের এক বিধায়ক ও মন্ত্রীকে প্রার্থী করার ব্যাপারে বিবেচনা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কারা তাঁরা?
শাসক দলের ওই সূত্রের খবর, তাঁদের একজন হলেন জুন মালিয়া। জুন মেদিনীপুর বিধানসভার বিধায়ক। একুশের বিধানসভা ভোটের সময়ে অনেকের ধারণা ছিল মেদিনীপুর বিধানসভায় অবধারিতভাবে হারবে তৃণমূল। সেই কঠিন আসনে জুন মালিয়াকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁকুড়া বিধানসভায় সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বা আসানসোল বিধানসভায় সায়নী ঘোষ পরাস্ত হলেও মেদিনীপুরে জিতেছিলেন জুন। এবার তাঁকে মেদিনীপুর লোকসভায় দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রার্থী করার কথা ভাবছেন মমতা-অভিষেক।
একই ভাবে বন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে ঝাড়গ্রাম আসনে প্রার্থী করার ব্যাপারে আলোচনা চলছে শাসক দলের মধ্যে।
উনিশের লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম আসনে আর এক বীরবাহাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনি হলেন, জনজাতি সংগঠনের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী এবং স্কুল শিক্ষিকা বীরবাহা সরেন। বীরবাহা মাত্র ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছিলেন। ওই আসনে জিতেছিলেন বিজেপির প্রার্থী কুমার হেমব্রম। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে আঠারো সালের পঞ্চায়েত ভোটেও ঝাড়গ্রামে ধরাশায়ী হয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু একুশ সালের বিধানসভা ভোটে সেই ঝাড়গ্রামেই তৃণমূলের কামব্যাক হয়। সেই লড়াইয়ে অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন বীরবাহা হাঁসদা।
বীরবাহা বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার দায়িত্ব রদবদলের সময়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বন মন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে বীরবাহা হাঁসদাকে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ বীরবাহা হাঁসদার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ওজন বেড়েছে।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, জুন ও বীরবাহা প্রার্থী হচ্ছেই এমনটা এখনই বলা হয়তো ঠিক হবে না। তবে এ নিয়ে সংশয় নেই যে তাঁদের নাম যথাক্রমে মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহর মধ্যে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলবেন দলের শীর্ষ দুই নেতা-নেত্রী।