শেষ আপডেট: 2nd August 2020 16:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মনের জোর আর ইচ্ছেশক্তি একসঙ্গে হাত ধরলে, অসাধ্যও সাধন করা যায়। সেই প্রমাণই রাখলেন মহারাষ্ট্রের বারামতী জেলার গৃহবধূ বেবি গুরাভ। ১৬ বছরের ছেলের সঙ্গে পরীক্ষায় বসে মহারাষ্ট্র বোর্ডের দশম শ্রেণির সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসএসসি পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করলেন মা। ক্লাস টেন পাশ করার স্বপ্ন পূরণ হল দেরিতে হলেও। জানা গেছে, খুব কম বয়সে বিয়ে হয়ে গেছিল বেবির। সংসারের জাঁতাকলে পড়াশোনা বন্ধ। অথচ স্বপ্ন দেখতেন, সেকেন্ডারির গণ্ডি পেরোবেন একদিন। সাংসারিক দায়িত্ব, সন্তান প্রতিপালন, রোজগারের চিন্তা-- এসবের মাঝে আর সে স্বপ্ন সফল হওয়ার পথ খুঁজে পায়নি। কিন্তু কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। তাই এবছরে যখন বেবির ছেলে সদানন্দ বোর্ডের পরীক্ষায় বসবে বলে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল, সঙ্গে লেগে গেলেন তিনি নিজেও। ৩৬ বছর বয়সে, এতদিনের অনভ্যাসের পরে, কে কী ভাববে তাকে পাত্তা না দিয়ে, ফের শুরু করলেন নতুন করে। আর পড়াশোনা একবার শুরু করতেই স্বপ্নেরা ফের জেগে উঠল। প্রস্তুতি শেষে ছেলের সঙ্গেই বসলেন পরীক্ষায়। ফল প্রকাশ হতেই চমক। বেবির কিশোর ছেলে সদানন্দ পেয়েছে ৭৩.২০ শতাংশ আর বেবি পেয়েছেন ৬৪.৪০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ছেলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করা বেবি। বেবি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী প্রদীপ গুরাভ একটি আঞ্চলিক পত্রিকার সাংবাদিক। তিনি এবং ছেলে দু'জনেই খুবই সাপোর্ট করেছেন বেবিকে। তাঁরা পাশে থাকার জন্যই ফের নতুন করে পড়াশোনা শুরু করতে পেরেছেন বেবি। তিনি সংসারের কাজের পাশাপাশি একটি কাপড়ের কারখানাতেও কাজ করতেন। তার ফাঁকে ফাঁকেই পড়াশোনা চালিয়ে যান। বাড়িতে রান্না করা বা অন্যান্য কাজের সময়েও সুযোগ পেলে খাতা-বই নিয়ে বসে পড়তেন তিনি। শেষ পর্যন্ত এত পরিশ্রম সার্থক। পরীক্ষায় পাশ করে স্বপ্ন পূরণ হল তাঁর। সকলে দেখল, মনের জোরে কেমন করে বাধা পেরিয়ে যাওয়া যায়। স্ত্রীর এই সাফল্যে খুশি বেবির স্বামী প্রদীপও। বেবির পরিশ্রম ও মনের জোরের প্রশংসা করেন তিনি। তবে স্বপ্ন পূরণের দৌড় এখানেই থামাতে চান না বেবি। এবার তাঁর ইচ্ছা, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাতেও পাশ করা। সেই উদ্দেশে ছেলের সঙ্গেই আঘামীর প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন বেবি গুরাভ।