অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও আদিত্যনাথ যোগী।
শেষ আপডেট: 31st January 2025 15:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মৌনি অমবস্যার রাতে অমৃতস্নানকে ঘিরে কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনায় সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ৩০। তবে আদতে সংখ্যাটা আরও বেশি। ১০০ পেরিয়ে গেলেও অস্বাভাবিক কিছু নেই বলে দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, "খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গেলেও অস্বাভিক কিছু নেই!" এরপরই কুম্ভ মেলা নিয়ে যোগী রাজ্যের প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়েই বড় প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক।
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের কথায়, "আসলে প্রস্তুতি কম, ব্যবস্থাপনা বেশি। শুধু ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারই করা হয়েছে। তার ফলেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল। এঘটনা যদি বিজেপি বিরোধী রাজ্য, যেমন বাংলা বা তামিলনাড়ুতে ঘটত, তাহলে তো এতদিনে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলা হত!"
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, প্রশাসনিক গাফিলতির বিষয়টিকে সামনে রেখে অভিষেক পরোক্ষে প্রশ্ন তুলেছেন, এতবড় দুর্ঘটনার পরও কেন যোগী রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে না?
দুর্ঘটনার জেরে যেভাবে সাধারণ মানুষের আর্তি, হাহাকার সামনে এসেছে তাতে যোগী রাজ্যের প্রশাসনের প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগড়ে অভিষেক বলেন, "মানুষ জীবদ্দশায় একবারই কুম্ভমেলায় যায়। অথচ সেখানে গরিব মানুষের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। সবকিছু নেতা আর বড়লোকদের জন্য। তাদেরকে খাতির করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তাদের জন্য রাস্তা পর্যন্ত খালি করে দেওয়া হচ্ছে। এরা ভাবে দেশটাকে কিনে রেখেছি। তার ফলেই এতগুলো প্রাণ চলে গেল।"
এ প্রসঙ্গে বাংলার গঙ্গাসাগর মেলার কথাও মনে করিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তিনি বলেন, "আমরাও তো এখানে গঙ্গাসাগর মেলা করছি। ১৪ বছরের সরকার। এখানে শুরু থেকেই মানুষের নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়।" এরপরই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রসঙ্গ টেনে আনেন অভিষেক।
প্রসঙ্গত, সরকারি হিসেবে কুম্ভমেলায় মৃতের সংখ্যা ৩০ জন। মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য হিসাবে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
কিন্তু আসলে কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তার ওপর মৃতের পরিবারকে ডেথ সার্টিফিকেট-পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট না দিয়ে জোর করে চিরকুটে সই করে মৃতদেহ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই সূত্রেই এই প্রশ্নও সামনে আসছে, সরকারিভাবে ডেথ সার্টিফিকেটের কোনও কাগজই যদি না থাকে তাহলে কীভাবে ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য আবেদন করবেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা? গোটা ঘটনায় প্রকৃত মৃতর সংখ্যা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে যোগী রাজ্যের প্রশাসনের বিরুদ্ধে।