শেষ আপডেট: 5th March 2025 20:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গভীর রাতে বর্ধমানের রমনাবাগান চিড়িয়াখানার নিস্তব্ধতা আচমকাই ভেঙে যায়। জলকাদামাখা এনক্লোজার থেকে উঠে আসে অদ্ভুত শব্দ— যেন কারও রাগ, কারও হতাশা, আবার কারও প্রেমের জন্য মরিয়া লড়াই। সেই রাতেই ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। প্রাণ হারায় একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ কুমির। ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই কি চিড়িয়াখানায় ঘটে গেল এই মর্মান্তিক ঘটনা! প্রেমিকাকে কাছে পাওয়ার জন্যই চার প্রেমিকের লড়াইয়ে প্রান গেল এক কুমিরের!
রমনাবাগান চিড়িয়াখানায় মৃত্যু হয়েছে একটি কুমিরের। কুমিরের খাঁচার মধ্যেই ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তার দেহ পাওয়া যায়। বন দফতর দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। বর্ধমানের রমনাবাগানের জুওলজিকাল পার্কে পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ কুমিরের মৃত্যু এবং একই সঙ্গে তিনটি চিতা বাঘ চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় জুওলজিকাল পার্কের বন্যপ্রাণ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
যদিও বর্ধমান বিভাগীয় বনাধিকারিক সঞ্চিতা শর্মা জানান,নিজেদের মধ্যেই লড়াইয়ের ফলে গুরুতরভাবে জখম পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ কুমিরটির চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে,চর্মরোগে আক্রান্ত তিনটি চিতা বাঘের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুটি বাঘ সুস্থ হয়ে গেলেও কালি নামে একটি চিতা বাঘের বয়সজনিত কারণে সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগছে।
মৃত কুমিরটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে দেহাংশের নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।তাছাড়াও সংক্রমণ রোধে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। জুওলজিকাল পার্কের চিকিৎসক তপন কুমার ঘোষ জানিয়েছেন,এনক্লোজারে মোট ৫ টি মিষ্টি জলের মেছো কুমির ছিল। যখন পুরুষ কুমিরের সংখ্যা বেড়ে যায় স্ত্রী কুমিরের তুলনায় তখন নিজেদের মধ্যে মারামারি করে থাকে।
এইরকম মারামারিতেই পুর্ণবয়স্ক পুরুষ কুমিরটি গুরুতরভাবে জখম হয়।শরীরে গভীর ক্ষতের কারণেই চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে কলকাতার আঞ্চলিক পরীক্ষাগারের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। পাঁচ বছর আগে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে আনা কুমিরের মৃত্যুর কারণ নিয়ে অবাক করা তথ্য দিয়েছে বন দফতর।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরের এই সময়ই কুমিরের প্রজননের সময়। রমনাবাগানে চারটি কুমিরের মধ্যে একটি স্ত্রী কুমির ছিল। সঙ্গিনীকে পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতার কারণেই অন্য একটি পুরুষ কুমির এই কুমিরটিকে মেরে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, গ্রীষ্মের শুরুতে জলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিক কারণে কুমিরদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সেই কারণেই নিজেদের মধ্যে মারামারি ঘটনা বাড়ে।
রামনবাগানের পশু চিকিৎসক চিকিৎসক তপন ঘোষ জানান, 'এগুলি মিষ্টি জলের মেছো প্রজাতির কুমির। কুমিরটির গায়ে অনেক জায়গায় ক্ষত ছিল। প্রাথমিকভাবে নিজেদের মধ্যে মারামারির কারণে কুমিরটির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।'