শেষ আপডেট: 30th October 2024 14:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আবাস যোজনার প্রাপকদের বাড়ির তালিকা তৈরি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগে মঙ্গলের পর বুধবারও জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন একাংশ গ্রামবাসী। তালিকা থেকে বাদ যাওয়া নামগুলি পুনরায় রি-চেক করার জন্য মঙ্গলবারই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবার মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশ দ্রুত কার্যকর করা নিয়ে বুধবার দুপুর ৩টেয় নবান্নে বিশেষ বৈঠক ডাকলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ভিডিও কনফারেন্সে প্রতিটি জেলার জেলাশাসককে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারাও।
বাংলা আবাস যোজনার টাকা যে রাজ্যই দেবে তা আগেই জানিয়েছিল নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের মধ্যে আবাস যোজনায় রাজ্যের ১১ লক্ষ মানুষকে বাড়ি বানানোর জন্য প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে দেবে নবান্ন।
আপাতত এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে বাংলার আবাস যোজনা ( Banglar Awas Yojana – BAY)। ইতিমধ্যে যুদ্ধকালীন সমীক্ষায় আবাস যোজনার প্রাপকদের নামের তালিকাও তৈরি। টাকা বিলির আগে শেষ সমীক্ষায় অনেকের নাম বাদ গিয়েছে বলে অভিযোগ। যাদের নাম বাদ গিয়েছে, তাদের মধ্যে যোগ্য কেউ বাদ গেলেন কি না তা খতিয়ে দেখতে পুনরায় তালিকা রি-চেক করার জন্য মঙ্গলবার নবান্নে পঞ্চায়েত দফতরকে নির্দেশ দেনন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসন সূত্রের খবর, তালিকায় নাম থাকা বেশ কিছু মানুষের যেমন মৃত্যু হয়েছে তেমনই বহু যোগ্য প্রাপক হয়তো তালিকা থেকে বাদ গিয়ে থাকতে পারেন। একজনও যোগ্য মানুষ যেন বঞ্চিত না হন, সেটাই মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য। তাই প্রথম কিস্তির টাকা বিলির আগে আরও একবার আবাসের বাড়ি বানানোর তালিকা রি-চেক করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জানতে জেলা শাসকদের সঙ্গে এদিন দুপুরে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যসচিব।
রাজ্যের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা খাতে বাংলার প্রাপ্য ৮২০০ কোটি টাকা প্রায় তিন বছর ধরে আটকে রেখেছে মোদী সরকার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র ওই টাকা না দিলে রাজ্যই তার কোষাগার থেকে দেবে। শেষমেশ সেকথা জানিয়েও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এজন্য গত সেপ্টেম্বরে নবান্নের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ পরিবারকে পাকা বাড়িতে বানাতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। তিন লপ্তে দেওয়া হবে সেই টাকা। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখের মধ্যে। পরের কিস্তিতে দেওয়া হবে ৪০ হাজার টাকা। আর শেষ কিস্তিতে দেওয়া হবে ২০ হাজার টাকা।
সরকারের এক শীর্ষ আমলার কথায়, ১১ লক্ষ উপভোক্তার অর্থ অন্তত ৪৪ লক্ষ (পরিবার পিছু চার জন ধরে) মানুষ সুবিধা পাবেন।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, ২৬ এর বিধানসভার আগে এটা মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টারস্ট্রোক বলা যেতে পারে। সরকারি এই প্রকল্পের দৌলতে শাসক দলের গ্রামীণ জনভিত্তি আরও মজবুত হতে পারে।