শেষ আপডেট: 14th April 2025 11:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্যজুড়ে ফের সক্রিয় বজ্রগর্ভ মেঘ। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় আগামী বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বজ্রপাত-সহ বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে সতর্কতা। সেই সঙ্গে আবহবিদদের বার্তা, বজ্রপাতের সময় জনসাধারণকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে রাজ্যে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরির প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মধ্য বিহার থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে উত্তর ওড়িশার উপকূল পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা সক্রিয় রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে অনুকূল বায়ুস্রোত এবং বঙ্গোপসাগর থেকে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের প্রবেশ। এর ফলে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ের সম্ভাবনা প্রবল।
ভারতের প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় বজ্রপাতের কারণে। প্রতিবছর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে শত শত মানুষ বজ্রাঘাতে প্রাণ হারান। পশ্চিমবঙ্গও এই তালিকা থেকে বাদ নয়। যদিও চলতি মরসুমে এখনও রাজ্যে বজ্রপাতে মৃত্যুর খবর নেই, তবে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে সম্প্রতি একদিনে ৮০ জন মানুষের মৃত্যুর ঘটনা আশঙ্কার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বজ্রপাতের সম্ভাব্য স্থানগুলি চিহ্নিত করে আগাম সতর্কতা জারি করা হয় ‘দামিনি’ অ্যাপের মাধ্যমে। সেই তথ্য পৌঁছে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে।
এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়াবিদদের পরামর্শ, বজ্রপাত শুরু হলে খোলা মাঠ, জলাশয় বা গাছের নীচে থাকা বিপজ্জনক। যত দ্রুত সম্ভব পাকা ও শক্তপোক্ত ঘরের মধ্যে আশ্রয় নিতে হবে। বজ্রপাত চলাকালীন বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার থেকেও বিরত থাকা প্রয়োজন। মাঠে কাজ করা কৃষকদের জন্য বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন।
আবহবিদরা জানাচ্ছেন, মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সময়কালকে সাধারণত বজ্রপাতের মরশুম ধরা হয়। এই সময় পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে বজ্রগর্ভ মেঘ, ঝড়বৃষ্টি এবং বিদ্যুৎ চমকের প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি থাকে।
সতর্কতাই এই দুর্যোগ থেকে রক্ষার প্রধান উপায়, এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারি উদ্যোগ ও জনসচেতনতাই পারে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে।