অনিলের ছেলে বলেন, ‘‘আমার বাবাকে মারধরের অভিযোগের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উলটে পাল্টা ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’’
প্রহৃত বাম নেতা ও খড়গপুরের অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রী।
শেষ আপডেট: 5 July 2025 03:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তাঁর স্বামীকে প্রকাশ্য রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের খড়্গপুরের (Kharagpur) নেত্রী বেবি কোলের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নেত্রীর নামে এক নয়, দু’দু’টি এফআইআর (FIR) দায়ের হলেও এখনও কেন গ্রেফতার নয় তিনি? এই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি (Letter to Chief Minister seeking justice) লিখলেন খড়্গপুরের প্রবীণ বাম নেতা (Left leader) অনিল দাস ওরফে ‘ভীম’-এর স্ত্রী সুস্মিতা দাস।
সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে সুস্মিতার দাবি, ‘‘আমার স্বামী ৬৬ বছর বয়সি। খড়্গপুর শহরের পরিচিত মুখ। তাঁকে রাস্তায় ফেলে, রং ঢেলে, জুতো দিয়ে পেটানো হয়েছে। অথচ চার দিন কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ!’’ চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত সোমবার খড়্গপুর শহরের খরিদা এলাকায় ‘আমরা বামপন্থী, খড়্গপুর’ সংগঠনের সম্পাদক অনিল দাসের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রং-এর দোকানে ঢুকে পড়েন বেবি। সেখানে আশ্রয় নেওয়া অনিলকে টেনে বার করে এনে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। ঘটনাটি ধরা পড়ে একটি ভিডিওতেও (ভিডিওর সত্যতা দ্য ওয়াল যাচাই করেনি), যেখানে দেখা যায় এক মহিলা অনিলের গায়ে রং ঢেলে তাঁকে জুতোপেটা করছেন।
ঘটনার পর খড়্গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অনিল। শুধু তিনিই নন, তৃণমূলের তরফেও বেবির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। এমনকি বেবিকে শোকজও করেছে শাসকদল। তবুও কেন এখনও গ্রেফতার হননি বেবি? সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি সুস্মিতার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষ। বিচার ছাড়া ভরসা করার জায়গা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই আবেদন—নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং দোষীর শাস্তি নিশ্চিত হোক।’’
এই ঘটনার জেরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অনিল দাসও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। বেবি কোলে অত্যন্ত প্রভাবশালী। প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার জেরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাই আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। বিচারব্যবস্থার উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’’
অনিলের ছেলে বলেন, ‘‘আমার বাবাকে মারধরের অভিযোগের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উলটে পাল্টা ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’’
উল্লেখ্য, ঘটনার পর বেবি কোল থানায় গিয়ে অনিলের বিরুদ্ধেও একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, আর্থিক প্রতারণা, জালিয়াতি-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে অনিল দাসের বিরুদ্ধে। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, কয়েকজনের থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছিলেন অনিল দাস। চাকরি দেওয়ার কথা বলায় অনিল বারবার অশালীন ব্যবহারও করেন। কিন্তু এতদিনে কেন তিনি কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি, সেই প্রশ্ন উঠেছে।