শেষ আপডেট: 7th November 2024 07:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুধবার সকালে শুনানি হওয়ার কথা ছিল আরজি কর মামলার। সকালেই জানানো হয়, তা পিছিয়ে হবে দুপুর ৩টেয়। এরপর দুপুরে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় সেটি উঠবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে। তারপরই সংবাদমাধ্যমে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন আরজি করের নির্যাতিতার মা-বাবা। সোজাসুজি কারও দিকে আঙুল না তুললেও স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা ভালভাবে নেননি। দেন আন্দোলনের বার্তাও।
মঙ্গলবারও স্থগিত হয়েছিল আরজি কর মামলার শুনানি। তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বুধবার শুনানির তালিকায় সবচেয়ে প্রথমে এই মামলাটিই শুনবে আদালত। সেই মতো সকাল সকাল শীর্ষ আদালতে নজর ছিল দেশবাসীর। তবে বেলা গড়াতেই ছবিটা পরিষ্কার হয়। জানা যায়, শুনানি বুধবারও হবে না।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এনিয়ে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তোলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বার্তা দেন পথে নামার। তারিখ পে তারিখ, আর কত দিন। সে প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। দেশবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানান।
নির্যাতিতার বাবা চোখের জল মুছে দৃঢ় কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, 'আজ আমার মেয়ে হাসপাতালে চাকরি করতে গিয়ে ধর্ষিতা হয়েছে, খুন হয়েছে। রাজ্য সরকার কী করে এর দায় এড়িয়ে যেতে পারে? আমি তো এই প্রশ্নের উত্তর পাইনি। তিন মাস হয়ে গেল। আমরা এতদিন কেঁদে ফেলতাম কথা বলতে গিয়ে। এখন আর চোখে জল আসে না। কঠোর হয়েছি আমরা। আপনারা আমাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আগে এভাবে কথা বলিনি। লড়াই করতে করতে আমরা কঠোর হয়েছি।'
আরজি করের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৩ মাস। রাজ্য সরকারি হাসপাতালে এমন খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারই তাই বিষয়টি প্রথমে দেখবেন। বলেন নির্যাতিতার বাবা। বিচারের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও লেখেন তিনি। সেসব প্রসঙ্গে এদিন বলেন, 'আমাদের হারানোর কিছু নেই। এখন বিচার পেতেই হবে। লোকালে রাজ্য সরকারই দেখে বিষয়গুলো। কাকে দায়ী করব? কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছি। আশা করি বিচার পাব। এখনও উত্তর পাইনি সেখান থেকে। কিছু পজিটিভ কথা আমাদের সঙ্গে হয়েছে।'
নির্যাতিতার বাবার কথা শেষ হওয়ার আগেই মা গর্জে ওঠেন সমগ্র বিষয়টি নিয়ে। পথে নামার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা দেশবাসীকে বলব, আপনারা বিচারের জন্য যেভাবে আন্দোলন করছেন, লড়াই করছেন, আমরাও রাস্তায় নামব। আমাদের পাশে থাকবেন। বিচার আমরা ছিনিয়ে আনবই। আমরা মেয়ে হারিয়ে কঠিন হয়ে গেছি। আমাদের এখন রাস্তা নামতেই হবে। বিচার পেতে গেলে আন্দোলনই একমাত্র রাস্তা।'
এদিকে, আগামী ১০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তার আগে শীর্ষ আদালতে এই মামলা কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার। আর বৃহস্পতিবার ঠিক সেদিকেই নজর থাকবে গোটা দেশের।