শেষ আপডেট: 30th January 2025 12:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহাকুম্ভের বিপর্যয়ে কোনও বাঙালি আটকে রয়েছে কিনা তা জানতে ক্রমাগত উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে নবান্ন। এর মধ্যেই খবর মিলেছে, কলকাতার এক বাসিন্দা মারা গেছেন কুম্ভের পদপিষ্টের ঘটনায়। পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে কুম্ভে গিয়ে।
ছেলে, মেয়ে ও নিজের বোনের সঙ্গে বাসন্তী পোদ্দার নামের বিজয়গড় লাগোয়া অশ্বিনীনগরের বাসিন্দা ওই মহিলা গেছিলেন পুণ্যস্নানে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আচমকা হুড়োহুড়ি শুরু হলে বাসন্তী দেবী কোনওভাবে পড়ে যান। তখনই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে এবং তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতার ছেলের অভিযোগ, এত ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য যে পরিমাণ পুলিশ দরকার তা ছিল না ঘটনাস্থলে। নিরাপত্তায় গাফিলতির জন্যই তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁর।
এই মুহূর্তে বাসন্তী দেবীর মৃতদেহ প্রয়াগরাজ থেকে কলকাতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সলর জানিয়েছেন, মৃতদেহের অবস্থা ভাল নয়, তাই যতটা দ্রুত সম্ভব তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মৃতার ছেলে জানিয়েছেন, দেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের একটি কাগজ দিয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই মায়ের দেহ কলকাতায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছে, পুলিশের একটি টিম ইতিমধ্যে ওই প্রৌঢ়ার বাড়িতে গেছে এবং পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেছে। যা যা করণীয় তা করা হবে। এদিকে স্থানীয় কাউন্সিলর তাপস চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনায় সরাসরি যোগী সরকারের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, দেহের ময়নাতদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি, কোনও ডাক্তারকে দিয়ে দেহ পরীক্ষাও করা হয়নি। শুধু একটি কাগজ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই সরকার খালি হিসেব করছে কত লক্ষ কোটি টাকা লাভ হবে কুম্ভমেলা থেকে, মানুষের জীবনের কোনও মূল্য নেই তাঁদের কাছে। এমনই অভিযোগ তাঁর।
মেদিনীপুরের এক প্রৌঢ়ারও মহাকুম্ভে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। খড়গপুর থেকে দুই মেয়ে-জামাই, বউমা এবং এক নাতনিকে নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন প্রয়াগরাজে। তবে ত্রিবেণী সঙ্গমের সামনে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্টের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বাসিন্দা বছর ৭৮-এর উর্মিলা ভুঁইয়া।
পদপিষ্টের ঘটনার পরে গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতীর সংযোগস্থল ত্রিবেণী সঙ্গম কার্যত খালি করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন আবার সেখানে একে একে যেতে শুরু করেছেন সাধু-সন্ন্যাসী, ভক্তরা। তথ্য বলছে, মঙ্গলবার যখন পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে, তখন কুম্ভমেলায় হাজির ছিলেন ৮ কোটি মানুষ। এর মধ্যে শাহি-স্নানের উন্মাদনায় গা ভাসিয়েছিলেন সাড়ে ৫ কোটি।
কিছু পুণ্যার্থীদের বিরুদ্ধে ধাক্কা মারার অভিযোগও তুলেছেন কয়েকজন। তাঁরা দাবি করেছেন, ভিড় বাড়তে থাকলেও কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি, উল্টে ধাক্কা মারা হয় জলের মধ্যে। তার জন্য আরও শোরগোল শুরু হয়।