ট্যাংরার নৃশংস ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা। তার মধ্যেই এবার কসবা থমকে গেল এক রহস্যমৃত্যুর ঘটনায়। মঙ্গলবার সন্ধেয় দক্ষিণ কলকাতার রাজডাঙার একটি আবাসনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃতদেহ।
প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 17 June 2025 16:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ট্যাংরার নৃশংস ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা। তার মধ্যেই এবার কসবা থমকে গেল এক রহস্যমৃত্যুর ঘটনায়। মঙ্গলবার সন্ধেয় দক্ষিণ কলকাতার রাজডাঙার একটি আবাসনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃতদেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি হয়তো আত্মহত্যার ঘটনা, যদিও শরীরে ক্ষতচিহ্ন ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৭০ বছরের সরজিৎ ভট্টাচার্য, যাঁর দেহ ফ্ল্যাটের হলঘরে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পাশের ঘর থেকে উদ্ধার হয় স্ত্রী গার্গী ভট্টাচার্য (৬৮) এবং তাঁদের ছেলে আয়ুষ্মান ভট্টাচার্যর (৩৮) দেহ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গার্গী এবং আয়ুষ্মানের শরীরে রয়েছে একাধিক কাটা দাগ।
স্থানীয়দের কাছ থেকেই মঙ্গলবার সন্ধেয় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কসবা থানার পুলিশ। জানা যায়, ৫০ নম্বর রাজডাঙা গোল্ড পার্কের ওই ফ্ল্যাটে সকাল থেকেই কেউ সাড়া দিচ্ছিলেন না। দরজাও ছিল ভিতর থেকে বন্ধ। কোলাপসিবল গেট এবং কাঠের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই সামনে আসে মর্মান্তিক দৃশ্য।
ডাক্তার এসে তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহগুলি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় আত্মহত্যা হতে পারে। তবে মা ও ছেলের দেহে ক্ষতচিহ্ন দেখেই সন্দেহ দানা বাঁধছে তদন্তকারীদের মধ্যে। আত্মহত্যা না কি খুনের পর আত্মহনন—এখনই স্পষ্ট নয় কিছুই।
এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ট্যাংরা-কাণ্ডকে। যেখানে এক কিশোর সহ তিন মহিলার রহস্যমৃত্যু ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ট্যাংরার অতল শূর রোডের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল দে পরিবারের দুই বধূ এবং এক কিশোরীর দেহ। পরে দুর্ঘটনার পর গ্রেফতার হন কিশোর প্রতীপের বাবা ও কাকা।
এছাড়াও গত মার্চেই কসবায় আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। সেখানে আড়াই বছরের শিশুপুত্রকে শ্বাসরোধে খুন করে আত্মঘাতী হন সোমনাথ রায় ও তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রায়। আত্মীয়দের দাবি ছিল, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই ওই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। পুলিশ জানিয়েছে, কসবার এই সাম্প্রতিক ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর আসল কারণ স্পষ্ট হবে। তবে একাধিক মৃত্যু ঘিরে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরের দক্ষিণ প্রান্তে।