শেষ আপডেট: 12th December 2024 20:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা একই পরিবারের তিন জনের। ঘটনায় একজনের মৃত্যু হলেও বাকি দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তে নেমে সুইসাইড নোট হাতে এসেছে পুলিশের। কিন্তু একসঙ্গে কেন তিনজন এমন পদক্ষেপ নিলেন তা এখনও জানা যায়নি।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার নরেন্দ্রপুরের ঘটনা। এদিন বাড়ি থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও মা জলি রায়কে (৫৫) বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরিবারে আর্থিক সমস্যার কারণেই তিন জন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে খবর, নরেন্দ্রপুর থানার রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের লস্করপুর এলাকার বাসিন্দা দীপক রায় (৬৩), স্ত্রী জলি রায় (৫৫) ও মেয়ে দিশারী রায় (২৩)। জানা গেছে, বুধবার রাতে জলি তাঁর বোন ডলি দাসকে ফোন করে নিজের বাড়িতে আসতে বলেন। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যই তিনি ফোন করেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
ডলি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে দশটা নাগাদ দিদির বাড়িতে যান। বেশ কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করলেও পরিবারের কেউই সাড়া দেননি। এর কিছুক্ষণ বাদে তাঁর বোনের মেয়ে দিশারী এসে জানায় তাঁরা তিন জনেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিয়েছেন। দরজা খোলার সময়ে দিশারীর হাতও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা ছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন ডলি। দরজা খুলতেই ঘরে ঢুকে তিনি দেখেন, দীপক ও জলি অচৈতন্য অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। বিষয়টি দেখে ঘাবড়ে গিয়েই প্রতিবেশীদের খবর দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। এরপরই তিনজনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় ইতিমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল পরিবার তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দীপক রায়ের বাড়ি হাবড়ায়। তিনি ঘরজামাই হয়ে নরেন্দ্রপুরে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ হলেও কয়েকমাস আগে তাঁর কাজ চলে যায়। এরপর বাড়িতেই মুদির দোকান খোলেন দীপক। কিন্তু ভালভাবে না চলায় সেটিও বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর আর্থিক অনটনের কারণে কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন দিশারীও। আত্মীয়দের মতে, আচমকা কাজ হারানোয় পরিবারের কোনওরকম রোজগার ছিল না। দিন দিন বাড়ছিল দেনার চাপ। সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। দু’জন সুস্থ হওয়ার পর তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তবেই আসল সত্য সামনে আসবে বলেই ধারণা নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশের।