শেষ আপডেট: 10th April 2025 19:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটি ঘটনায় তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্য মনে করিয়ে দিয়েছিলে শীর্ষ আদালত। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও রাজ্যের বিধানসভায় গৃহীত বিল রাজ্যপাল অনুমোদনের অপেক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলিয়ে রাখতে পারেন না। তা আইনসিদ্ধ নয়। সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পরই ফের চাপা উত্তেজনা শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ও সরকারের মধ্যে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব মনে করিয়ে দেন। জানান, ২০১৬ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বিধানসভায় পাস হওয়া মোট ২৩টি বিল রাজ্যপালের সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছে। এরপরই বুধবার রাজভবনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, কেন এই বিলগুলিতে এখনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
রাজভবনের দাবি, ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে রাজ্যপাল মোট ১১টি বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে ১০টি বিল বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত এবং একটি ‘অপরাজিতা বিল।’ এই অপরাজিতা বিল রাজ্য সরকার পাশ করিয়েছিল আরজি কর-কাণ্ডের পর ধর্ষণ করে খুনের মতো ঘটনায় কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে। রাজভবন আরও জানায়, কয়েকটি বিল অনুমোদনের আগে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছিল, যার উত্তর সঠিকভাবে এপর্যন্ত রাজভবনের হাতে এসে পৌঁছয়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবারও এই প্রসঙ্গ ওঠে। রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। স্পষ্ট জানান, সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাজ্যপাল ইচ্ছেমতো বিল আটকে রাখতে পারেন না বা সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের ডেকে পাঠানোর অধিকারও তাঁর নেই।
শোভনদেব বলেন, 'কোথাও লেখা নেই রাজ্যপাল ইচ্ছেমতো বিল আটকে রাখতে পারবেন বা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। যদি কোনও বিল নিয়ে তাঁর আইনগত আপত্তি থাকে, তিনি সরকারকে চিঠি লিখে তা জানাতে পারেন। অতিরিক্ত কিছু করার ক্ষমতা তাঁর নেই। যেসব বিল নিয়ে রাজ্যপালের আপত্তি আছে, তিনি তা রাজ্য সরকারকে জানাতে পারেন। তবে বাধ্যতামূলকভাবে সেই বিল অনুমোদন করতে হবে। একান্ত প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ফাইল আটকে রাখা একপ্রকার ক্ষমতার অপব্যবহার।'
শোভনদেব সেই সূত্রেই রাজ্যপালের পদটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মতে, 'অনেক রাজ্যে এই প্রশ্ন উঠছে যে রাজ্যপাল পদটির আদৌ প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা। সুপ্রিম কোর্ট যেটা বলেছে, সেটা একেবারে সঠিক। সমস্ত রাজ্যপালেরই সেই পর্যবেক্ষণ মেনে নেওয়া উচিত।'