শেষ আপডেট: 28th September 2024 15:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওএসডি কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তোলাবাজির। পুলিশে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে এই নিয়ে। তদন্ত করছে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাক সাত-সাতটা ফ্ল্যাটও আছে। এই নিয়ে তিনি আগেও অভিযোগ করেছিলেন বলেও জানান তিনি।
এদিন শুভেন্দু বলেন, 'কালীর সাতটা ফ্ল্যাট আছে হাওড়া থেকে শুরু করে গড়িয়া থেকে নিউটাউন জুড়ে। পার্থ-অপার থেকে বেশি। এই কথা তো আমি কবে বলেছিলাম আপনাদের। এটা তো বাসি খবর।'
এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু এদিন আরও দাবি করেন, তৃণমূল ভবন তৈরির টাকা আসলে এই কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরই তোলাবাজির টাকা। তিনি বলেন, 'কালী টাকা তোলে। টিএমসি-র যে নতুন তৃণমূল হচ্ছে তপসিয়ায়, পুরনো বিল্ডিং ভেঙে ২০০ কোটি টাকার নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে, যিনি করছেন, তাঁকে টাকা তুলে পেমেন্ট করার দায়িত্ব কালীর। একথা তো কবেই বলেছি আমি।'
দেখুন কী বলেছেন শুভেন্দু।
প্রসঙ্গত, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওএসডি কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে তোলাবাজির অভিযোগ, তাতে জড়িয়ে পড়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কারণ কালীচরণ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা তোলেন বলেই অভিযোগ। বৃহস্পতিবার শেক্সপিয়ার সরণী থানায় এই মর্মে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে তাঁর নামে। সেটি করেছেন আবার অভিষেকেরই ক্যামাক স্ট্রিট অফিসের এক অফিসার অয়ন ঘোষ দস্তিদার।
খোদ মেয়রের ওএসডি কালীচরণের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ?
সূত্রের খবর, সরকারি অফিসার থেকে ব্যবসায়ী-- অনেকের কাছ থেকেই মোটা টাকা আদায় করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নিজেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কাছের লোক' বলে পরিচয় দিয়ে এই কাণ্ড করতেন কালীচরণ।
পাশাপাশি, অনেককে নানা বিষয়ে মিথ্যে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। কারণ তাঁকে প্রভাবশালী বলে মনে করে অনেকেই নানা বিষয়ে অনুরোধ-উপরোধ করতেন। বিনিময়ে কালীচরণ চাইতেন টাকা। এভাবেই নাকি কয়েক কোটি টাকা তোলাবাজি করেছেন।
অয়ন তাঁর লিখিত অভিযোগে আরও জানিয়েছেন, লোকঠকানো এই কারবারে মেয়রের ওএসডি কালীচরণ ছাড়াও আরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁদের কারও কোনও যোগ নেই।
অয়ন ঘোষদস্তিদারের অভিযোগ পাওয়ার পরে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খোঁজ মিলেছে একাধিক প্রতারিত ব্যক্তিরও। তাঁরা টাকা তো ফেরত পানইনি, আইনি পথেও মেলেনি প্রতিকার।
এই প্রসঙ্গে দলীয় কোন্দলের কথা উঠলে শুভেন্দু বলেন, তাঁর তেমন মনে হয় না। অভিষেকের নাম না করে তিনি বলেন, 'ওঁর একমাত্র পরিচয় উনি মমতা ব্যানার্জীর ভাইপো। আর কোনও পরিচয় আছে বলে আমি মনে করি না। ওঁর নিজস্ব কিছু নেই। মমতা নিজেও অভিষেকের উপর নির্ভরশীল নন।'
তিনি অভিষেককে ইঙ্গিত করে আরও বলেন, 'আমি অনেকবার বলেছি, প্যারাসুটে নামা ও লিফ্টে ওঠা লোক কখনও নেতা হতে পারে না। ছাত্ররাজনীতি বা যুবনেতা হিসেবে কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকলে, শ্রমিক আন্দোলন না করলে ন্যাচারাল লিডার হওয়া যায় না। মাঠেঘাটে মানুষের সঙ্গে মিশে স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করলে তবেই নেতা হওয়া যায়।'