বিকাশ ভবনের (Bikash Bhawan) সামনে 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের (Police) বেধড়ক লাঠিচার্জ ও হেনস্থার প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্যজুড়ে 'ধিক্কার দিবস' পালনের ডাক চাকরিহারা শিক্ষকদের (Job Deprived Teachers)।
ছবি: দ্য ওয়াল
শেষ আপডেট: 15 May 2025 23:23
রণদীপ দে ও সৌম্যদীপ সেন
বিকাশ ভবনের (Bikash Bhawan) সামনে 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের (Police) বেধড়ক লাঠিচার্জ ও হেনস্থার প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্যজুড়ে 'ধিক্কার দিবস' পালনের ডাক চাকরিহারা শিক্ষকদের (Job Deprived Teachers)। নাগরিক সমাজকে এহেন পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে বলে, রাজ্যের যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরি ফিরে পেতে অবস্থানে বসেছিলেন 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। অভিযোগ, আচমকা পুলিশকর্মীদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয় বিকাশ ভবনের সামনে।
রাত ৮টা নাগাদ সাইরেন বাজিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে বলপ্রয়োগ করে পুলিশ। যার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। রাস্তার উপর শুয়ে পড়েন অনেকে। কিন্তু তাঁদেরও টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেওয়া হয় এলাকা থেকে। একইসঙ্গে সকাল থেকে বিকাশ ভবনের যে কর্মীরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের বার করে আনে পুলিশ। তাঁরাও অনেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
যদিও পুলিশের বক্তব্য, প্রথম থেকেই আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার 'অনুরোধ' করা হলেও তাঁরা অবস্থান ছেড়ে ওঠেননি। যাঁরা সরকারি ভবনে কাজ করেন তাঁদের বের করার চেষ্টা করলে চাকরিহারারা নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন। সেই ইট-পাটকেল থেকেই আন্দোলনকারীরা আহত হয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য তারা কেবল লাঠি দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উত্তেজনা থামেনি সল্টলেক করুণাময়ী চত্বরে। দফায় দফায় চলছে লাঠিচার্জ। চাকরিহারাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশের মারে তাঁদের অনেকেই গুরুতর জখম। কিন্তু মিলছে না অ্যাম্বুল্যান্স। এমন অবস্থায় ঘটনাস্থলে পৌঁছন আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো-সহ ডক্টরস ফ্রন্টের অন্যান্য চিকিৎসকরা। তাঁরাই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেন আহত শিক্ষকদের। অনিকেত জানান, অনেকের হাড় ভেঙেছে। মাথায় সেলাই পড়বে বহু শিক্ষকের। ইতিমধ্যেই বিধাননগর হাসপাতালে প্রায় ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আহতের সংখ্যাও প্রায় ১০০।
সাড়ে দশটা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোটা পরিস্থিতির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আন্দোলনকারী চিন্ময় মণ্ডল-সহ অন্যান্য আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশের এহেন পৈশাচিক অত্যাচারের প্রতিবাদে গোটা বাংলার মানুষ যেন পথে নামেন। শুক্রবার রাজ্যজুড়ে ধিক্কার দিবস পালন ও যাবতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।