গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ।
শেষ আপডেট: 12th September 2024 12:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দুর্নীতির পাহাড়চুড়ো থেকে সন্দীপ ঘোষকে টেনে নামিয়ে এনে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। প্রতিদিনই একের পর এক সম্পত্তির খবর মিলছে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষর নামে। এবার জানা গেল, তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষও পিছিয়ে নেই। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করেই একের পর এক সম্পত্তি গুছিয়েছেন তিনিও।
সম্প্রতি সিবিআই-এর পাশাপাশি আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমেছে ইডি। তারাই এই দাবি করে জানিয়েছে, সন্দীপের স্ত্রীর নামে অন্তত এমন দু'টি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, যার কোনও সরকারি অনুমোদনই নেই।
ইডি-র আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ গত শুক্রবার ইডি যে একসঙ্গে সাতটি সম্পত্তিতে অভিযান চালায়, তার মধ্যে ছিল সন্দীপ ঘোষ এবং তাঁর একাধিক আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠের বসতবাড়ি। সেই দিনই খোঁজ মিলেছে সঙ্গীতার দুটি অবৈধ সম্পত্তির।
ইডি-র তদন্তকারীদের দাবি, সন্দীপের স্ত্রী ডা. সঙ্গীতা ঘোষ কোনও রকম সরকারি অনুমোদন ছাড়াই দু'টি স্থাবর সম্পত্তির মালকিন হয়েছিলেন। তার বদলে ২০২১ সালে সন্দীপ ঘোষের তরফ থেকে ওই সম্পত্তি কেনার জন্য একটি 'পোস্ট ফ্যাক্টো অ্যাপ্রুভাল' দেওয়া হয়। সে সময়ে আরজি করের অধ্যক্ষ পদেই ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। সেখানেই সহকারী অধ্যাপক পদে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা।
সূত্রের খবর, তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় ঘোষ দম্পতির একাধিক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। উদ্ধার হয়েছে অসংখ্য নথি। সেসব ঘেঁটে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে একটি এবং কলকাতায় তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে সন্দীপ-সঙ্গীতার।
এছাড়াও, কলকাতায় দু'টি বাড়ি রয়েছে তাঁদের। একটি খামারবাড়িরও সন্ধান মিলেছে। পাশাপাশি, এমন বহু নথি ও ডিজিটাল ডিভাইস পাওয়া গিয়েছে, যার সঙ্গে অপরাধের যোগ রয়েছে। এইসব নথিতে এমন একাধিক সম্পত্তির উল্লেখ রয়েছে, যেগুলি কিনতে অপরাধের আশ্রয় নেওয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখোমুখি হয়ে সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী বলেছিলেন, 'স্বামীর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।' যত ধরনের ইনভেস্টিগেশন সংস্থা রয়েছে, তাঁদের কো-অপারেট করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সঙ্গীতা আরও দাবি করেন, 'এখনও সন্দীপের বিরুদ্ধে কিছু পাওয়া যায়নি। আগামীদিনেও কোনও কাগজ পাবেও না। কারণ উনি কোনও দুর্নীতি করেননি।' বেশ জোরের সঙ্গেই কথাগুলি বলেছিলেন সন্দীপ ঘোষের স্ত্রী। এবার তিনি নিজেই ইডি-র স্ক্যানারে।
গত মাসের ৯ তারিখে ডাক্তারি ছাত্রী খুনের সূত্র ধরেই সামনে এসেছে আরজি কর মেডিক্যালের বিস্তর দুর্নীতির প্রসঙ্গও। এক বছর আগে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতি থেকে লাশ পাচার, একাধিক অভিযোগে সরব হওয়ার জেরে আরজিকর থেকেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন বহরমপুর মেডিক্যালে অতিরিক্ত সুপার তথা আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আখতার সাহেব। সেই সূত্রেই আদালতের নির্দেশে আরজি করের দুর্নীতিরও তদন্ত করছে সিবিআই। সম্প্রতি তাতে যোগ দিয়েছে ইডি-ও।