সন্দীপ ঘোষ।
শেষ আপডেট: 3 September 2024 02:02
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-সহ চার জন। সোমবার সন্ধ্যা গড়াতেই এই খবরে তোলপাড় পড়ে যায় চারদিকে। এর পরেই প্রশ্ন ওঠে, কখন হবে সন্দীপের মেডিক্যাল টেস্ট। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সন্দীপদের মেডিক্যাল টেস্ট করানোর পক্ষেই সায় ছিল না সিবিআইয়ের। শেষমেশ গভীর রাতে হয় সন্দীপদের মেডিক্যাল টেস্ট।
তবে এই টেস্ট করতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি সন্দীপ ঘোষ-সহ চারজনকে। জানা গেছে, রেলের বিআর সিং হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি টিম নিজাম প্যালেসে গিয়ে সকলের মেডিক্যাল টেস্ট করেছেন বরে খবর। জানা গিয়েছে, রাত ১২.১০ মিনিট নাগাদ চিকিৎসক-সহ তিন জনের একটি টিম নিজাম প্যালেসে পৌঁছায়। ওই টিমে দু'জন চিকিৎসক ও এক স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন বলে খবর।
প্রসঙ্গত, সিবিআই কাউকে গ্রেফতার করলে, সাধারণত তাঁদের মেডিক্যাল টেস্ট আগে করা কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় নিজাম প্যালেসের অন্দরেই। অতিরিক্ত সতর্কতার কারণেই এই ব্যবস্থা।
গতকাল সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও গ্রেফতার হওয়া আরও এই তিনজন হলেন বিপ্লব সিনহা, আফসার আলি এবং সুমন হাজরা। আফসর সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।
আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি সন্দীপের বিরুদ্ধে চিকিৎসার জৈব বর্জ্য দুর্নীতি, সরকারি টাকা নয়ছয়, নির্মাণের জন্য আইন ভেঙে ঠিকাদার নিয়োগ-সহ একাধিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনেছিলেন। সেই সূত্রে আরজি কর হাসপাতালের মর্গ থেকে শুরু করে অধ্যক্ষের দফতরে পৌঁছেছিল সিবিআই। একাধিকবার হাসপাতালে এসে অনুসন্ধান চালায় তাঁরা। সোমবার সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করতেই তাঁর সঙ্গে আরও তিনজনকে পাকড়াও করল কেন্দ্রীয় সংস্থা। সূত্রের খবর, সন্দীপের সঙ্গে এঁরা সকলেই আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে।
ধৃতদের মধ্যে বিপ্লবের সংস্থা নানা হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করত। আগেই তাঁর বাড়ি এবং সংস্থার অফিসে হানা দিয়েছিল সিবিআই। অন্যদিকে সুমন হাজরার ওষুধের দোকানেও তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। এঁদের সকলকেই সোমবার একসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে।
টানা ১৬ দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর শেষমেশ সোমবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, আদালতে সন্দীপকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আবেদন জানাবে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। সেই সঙ্গে সন্দীপের বিরুদ্ধে তদন্ত অসহযোগিতা করার অভিযোগও জানানো হতে পারে সিবিআই।
সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হলেও পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ চেয়ে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা লালবাজারের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের সাফ কথা, সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন মানে একটা দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বজায় থাকবে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি হল, আরজি কর কাণ্ডের ঘটনার দায় নিয়ে সরতে হবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে।