শেষ আপডেট: 13th August 2024 11:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটা রাতের একটা ঘটনা। গোটা জীবন বদলে দিয়েছে তাঁর। আর মাত্র কয়েক মাসের অপেক্ষা ছিল। তারপরই দুজনে বিয়ে করতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। আরজিকরের চিকিৎসক-পড়ুয়ার নৃশংস হত্যার খবরে বাক্যহারা হয়ে গেছেন তাঁর প্রেমিক। তবে সংবাদমাধ্যমে যেটুকু মুখ খুলেছেন তাতে জানিয়েছেন, নাইট ডিউটি করতেই চাইতেন না নির্যাতিতা।
তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার বাড়ির লোকেরা আগেই দাবি করেছেন যে, তাঁর আরজিকরে যেতেই ভাল লাগত না। ওপর মহল থেকে চাপ দেওয়া হত। কার্যত একই কথা বলেছেন নির্যাতিতার প্রেমিকও। তাঁর বক্তব্য, নাইট ডিউটি পছন্দ ছিল না তাঁর, করতে চাইত না। তবে কেন, কী সমস্যা ছিল তা কোনওদিন জানায়নি। একই সঙ্গে নির্যাতিতার প্রেমিক সংবাদমাধ্যমে এও জানিয়েছেন, তরুণী যে সেমিনার হলে ঘুমোতেন তাও তিনি জানতেন না। এইসব কথা তাঁকে কখনও জানাননি নির্যাতিতা।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন রাতে শেষবার প্রেমিকের সঙ্গেই ফোনে কথা হয়েছিল নির্যাতিতার। তবে নাইট ডিউটি থাকায় বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেননি তাঁরা। এখন সংবাদমাধ্যমে নির্যাতিতার প্রেমিক জানিয়েছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি তাঁকে ফোন করেছিলেন, কিন্তু কোনও উত্তর পাননি। পরে বেশ কয়েকবার মেসেজও পাঠান, তাও রিপ্লাই আসেনি। বেলার দিকে আসল খবরটি পাওয়ার পর তিনি রীতিমতো পাথর হয়ে যান। বিশ্বাসই করতে পারেননি প্রথমে যে এমন কিছু ঘটেছে।
নির্যাতিতার বাবা-মা দাবি করেছেন, মেয়ের ওপর ভীষণ চাপ ছিল। সিনিয়র ডাক্তারদের থেকে সহযোগিতা পেত না তাঁর মেয়ে। এমনকী পাঁচজনের ডিউটিতে চারজন ছেলের মধ্যে একা ওকে রাখা হত, সেটাতে অসুবিধা হত। তিনি এও দাবি করেছেন যে, তাঁর মেয়েকে খুন করার জন্য সুপারি দেওয়া হতে পারে! তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায় ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আরও কেউ এই জঘন্য ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কিনা, তার তদন্ত চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জানিয়েছেন, আগামী রবিবার পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ এই তদন্তের কিনারা না করতে পারলে তদন্তের ভার তিনি সিবিআইকে দিয়ে দেবেন। সেই প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের যে সিট গঠন হয়েছে তাতে সদস্য সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে তাতে স্পষ্ট, তরুণী চিকিৎসকের ওপর পাশবিক অত্যাচার হয়েছে। আসল দোষীর ফাঁসির সাজা চাইছেন সকলে।