শেষ আপডেট: 15th August 2024 09:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর হাসপাতালে বুধবার রাতের তাণ্ডবের পর কি সব সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট হয়ে গেছে? সন্দেহ বাড়ছে। কারণ, হাসপাতালের ভিতরে পুলিশ ইনচার্জ রুমেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ওই রুমেই সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ স্টোর করা হত। অভিযোগ উঠেছে, বুধবার রাতের ঘটনা সুপরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে যাতে, সব প্রমাণ নষ্ট হয়ে যায়।
পুলিশ ইনচার্জ রুমে হামলার ঘটনায় সমস্ত হার্ড ডিস্ক ভেঙে গেছে। পুলিশের দাবি, সেই সময় নিজেদের প্রাণ বাঁচাতেই তারা ব্যস্ত ছিলেন, তাই ভাঙচুর আটকানো সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, পুলিশ ইনচার্জ অবশ্য বলছেন, আগের সিসিটিভি ফুটেজগুলি সংরক্ষণ করা আছে, কিন্তু বুধবার রাতের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের আগেই এই হামলা হয়েছে। তাই সেগুলি আর পাওয়া যাবে না বলেই আশঙ্কা।
বুধবার মধ্যরাতে একদিকে যখন নারী আন্দোলন চলছে শহরজুড়ে সেই সময়ই আরজি কর হাসপাতালে হামলা হয়। একদল দুষ্কৃতী পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পড়ে। তারপর জরুরি বিভাগ ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে হাসপাতালের এমারজেন্সির গ্রুপ ডি বিভাগের কর্মী শুভঙ্কর সাহা বলেন, ''অন্তত ২৫০-৩০০ লোক ঢুকেছিল। ব্যারিকেড ভাঙার আগে তাদের বারণ করা হয়েছিল কিন্তু কেউ শোনেনি। হাসপাতালের অ্যাসিস্টেন্ট সুপার সেই সময় ডিউটিতে থাকলেও তাঁদের খোঁজ নেননি। কেন নেননি সেই প্রশ্ন করব।'' তাঁর এও হুঁশিয়ারি, এই হামলার ঘটনার পর তাঁদেরও সুরক্ষা নিয়ে যদি ভাবা না হয় তাহলে তাঁরা কাজ বন্ধ করে দেবেন।
ওই কর্মী এও জানিয়েছেন, রাতের হামলার সময় তাঁরা এমারজেন্সিতে ৪-৫ জন কর্মী ছিলেন। সকলের কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে হাসপাতালের অ্যাসিস্টেন্ট সুপারের ঘরে যান সাহায্য চাইতে। তবে তিনি ঘর থেকে বের হননি। বরং বলেছিলেন পুলিশ নাকি তাঁকে ঘরেই থাকতে বলেছে! কিন্তু হাসপাতালে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এত বড় ঘটনা ঘটল? শুভঙ্কর বলছেন, যে পরিমাণ লোক ঢুকেছিল তাদের সামলানোর মতো পুলিশ বাহিনী তখন ছিল না। দিলীপ নামের আরও এক কর্মী জানান, চলতি মাসেই তাঁদের এক সহকর্মী অবসর নেবেন। তাঁকে পর্যন্ত মারা হয়েছে, তিনি কোমরে চোট পেয়েছেন। তাই এই ঘটনার একটা হেস্তনেস্ত করে ছাড়বেন তাঁরা।
বুধবার মধ্যরাতে যখন গোটা শহর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে ঠিক তখনই আরজি করে একদম দুষ্কৃতী হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আক্রান্ত হন কয়েকজন পুলিশ কর্মীও। হামলাকারীরা ভাঙচুর করে পুলিশের একাধিক গাড়িতেও। এরপরই পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। নামানো হয় ব়্যাফও। তবে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের দাবি, পুলিশ নিজেদের বাঁচাতেই হাসপাতালের ভিতরে কোথাও কোথাও লুকিয়ে পড়ে। আর দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকে গিয়ে তাঁদের তো বটেই, রোগীর পরিবারদের, মহিলা কর্মীদেরও মারধর করে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা।