প্রিন্সিপাল সুহৃতা পাল।
শেষ আপডেট: 15th August 2024 21:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাসপাতালে কাজ করার নিরাপত্তা চাই, ভরসা চাই, বুধবার রাতের আক্রমণের পুনরাবত্তি ঘটবে না-- এই মর্মে প্রিন্সিপালের কাঠ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি চেয়েছিলেন আরজি কর হাসপাতালের ডাক্তার-নার্স-পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার সকালে তীব্র বিক্ষোভও হয় তাঁকে কেন্দ্র করে, সময় চেয়ে নেন তিনি। কথা দেন নিরাপত্তা বাড়ানোর। তবে লিখিত নিশ্চয়তা মেলেনি এখনও। দাবিপূরণ হয়নি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার। তাই আজ সন্ধেয় ফের নতুন করে বিক্ষোভ করলেন আন্দোলনকারীরা। ঘেরাও করলেন প্রিন্সিপাল ডাঃ সুহৃতা পালকে।
বুধবার রাতের আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে আন্দোলনকারী ডাক্তারি পড়ুয়া, জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্সদের চোখে মুখে। অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ পালিয়ে গিয়েছিল! উল্টো দিকে লোহার রড, লাঠি হাতে একদল উন্মত্ত মানুষ! সেই রাতে কীভাবে নিজেদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, বলতে গিয়ে এখনও বারে বারে শিউরে উঠছেন তাঁরা।
এই পরিস্থিতিতে দিনভর তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে। নার্স থেকে ডাক্তার-- সকলে জানিয়ে দেন, এমন প্রাণ হাতে করে রোগী পরিষেবা দিতে পারবেন না তাঁরা। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায়, পুলিশ ও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় পড়ুয়াদের। এর পরে আজ সন্ধেয় আরজি করের অধ্যক্ষের অফিসে তালা লাগিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
এদিন আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তোলেন, 'গতকাল রাতে হামলার সময়ে পুলিশ লাঠি ব্যবহার করেননি কেন? আন্দোলনকারীদের চুলের মুঠি ধরে বের করে দেওয়া গিয়েছিল। হামলাকারীদের নয় কেন।' পাল্টা পুলিশের তরফে জানানো হয়, ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রিন্সিপালও মৌখিক আশ্বাস দেন, নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট নন পড়ুয়ারা-ডাক্তার-নার্সরা।
বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশি ঘেরাটোপে হাসপাতালে ঢোকেন প্রিন্সিপাল। তখনই পড়েন নার্সদের বিক্ষোভের মুখে। প্রিন্সিপাল বলেন, 'নিরাপত্তা দিতে আমিও চাই। আমার জন্মের পর এমন ঘটনা দেখিনি, তোমরা বিশ্বাস করো। আজ থেকে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।'
বিক্ষুব্ধ নার্সরা পালটা দাবি করেন, 'আজ রাতে আপনাকেও থাকতে হবে।' প্রিন্সিপাল বলেন, 'একটু সময় দাও। স্বাস্থ্যভবনের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।' তাতে আরও খেপে গিয়ে সকলে বলতে থাকেন, 'নিরাপত্তা নিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি চাই।' স্লোগান তোলেন, ‘নো সেফটি, নো সার্ভিস।’ প্রিন্সিপাল এর পরে সময় চেয়ে নেন।
সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও নিরাপত্তা নিয়ে কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি না মেলায় ফের নতুন করে উত্তপ্ত আরজি কর। প্রিন্সিপালের ঘরে তালা দিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে দোষীর কঠোর শাস্তি ও নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার মধ্যরাতে পথে নেমেছিল নাগরিক সমাজ। শহর কলকাতা থেকে জেলা, সর্বত্রই হয় প্রতিবাদ মিছিল। বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ আচমকা হামলার ঘটনা ঘটে আরজি করে। এর পরে ওই রাতেই ঘটনাস্থলে এসেছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ডাক্তারি পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি পুলিশ কমিশনার। নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।