রাতের দখল মেয়েদের।
শেষ আপডেট: 14th August 2024 19:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাত দখল করবেন মহিলারা! বৃহস্পতিবার রাতে আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটার পর থেকে প্রতিবাদে উত্তাল গোটা রাজ্য। আরজি কর চত্বর ছেয়ে আছে বিক্ষোভে, চিৎকার শোনা যাচ্ছে, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'। এই পরিস্থিতিতে পথে নেমেছেন পড়ুয়া থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবীরাও। খাস কলকাতা শহরের বুকে, হাসপাতালের ভিতরে এমন ঘটনা কী করে ঘটল, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলে।
এই অবস্থায় স্বাধীনতার মাঝরাতে রাতের পথ দখল করতে নামতে চলেছেন মহিলারা। তাঁদের দাবি, এভাবেই ছিনিয়ে নেবেন নিজেদের নিরাপত্তার অধিকার। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে গিয়েছে এ হেন পোস্টে ও পোস্টারে। প্রতিটি মহিলাকে আহ্বান করা হয়েছে এই আন্দোলনে সামিল হতে।
ঠিক কী হতে চলেছে এই রাতে, এই রাত দখলের উদ্দেশ্যই বা কী?
এই 'রাত দখলের' প্রথম ডাক দিয়েছেন প্রেসিডেন্সি কলেজের এক প্রাক্তনী, রিমঝিম সিনহা। তিনি কয়েক দিন আগে ফেসবুকে লেখেন:
"রাতকে দখল করো!
আমি রিমঝিম সিনহা। আমি শুনলাম আর.জি.কর-এর প্রিন্সিপাল বলেছে, রাতে মেয়েটির একা ওদিকে যাওয়া ঠিক হয়নি। রাতে একা থাকা ঠিক হয়নি।
আমি রাতেই থাকবো। ১৪ই অগাস্ট রাত ১১.৫৯ নাগাদ স্বাধীনতার, আমার নারী স্বাধীনতার জন্য রাতে বাইরে থাকবো। গান গাইবো-গান শুনবো-আড্ডা দেবো। যা ইচ্ছে তাই করবো।
"রাত মেয়েদের জন্য সেফ নয়"
"পোষাক সেফ নয়"
"মেয়েটির চরিত্র ঠিক নয়"
এসব আর শুনতে বাধ্য নই
সারারাত বাইরে থাকবো।
যারা থাকতে চান, কমেন্টে জানান।"
এই পোস্টের পরেই শেয়ার-কমেন্টের ঝড় বয়ে যায়। রাত দখলের ডাক ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে। বলতে গেলে, সোশ্যাল মিডিয়াতেই সংগঠিত হয় এই অভিযান। শেষে তা বড় আকার নিয়েছে। কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি বাহিনীও মোতায়েন করছে পুলিশ-প্রশাসন।
রিমঝিম একটি ভিডিও বার্তায় ফেসবুকে জানান, 'আমি আরজি করের ঘটনায় নিরাপত্তায়হীনতায় ভুগছি। আমরা মেয়েরা কোথায় নিরাপদ? একজন ডিউটিরত মহিলা ডাক্তারের যদি এমন অবস্থা হয়, ধর্ষণ হয়ে খুন হতে হয়, তাহলে আমরা যারা পথে বেরোই, রাতে ফিরি, তাদের নিরাপত্তা কোথায়? এই জায়গা থেকেই আমি ফেসবুকে একটা কল দিই, যে স্বাধীনতার আগের রাতে আমি নিজের নিরাপত্তা ও স্বাধীমতার দাবিতে রাস্তায় বসব। তবে সেটা এত বড় সাড়া পাবে, তা আমি আশা করিনি।'
রিমঝিম আরও বলেন, মেয়েদের চালচলন ঠিক করে দেওয়ার প্রবণতা সমাজে বহুদিনই। কিন্তু তা করে মেয়েরা কিছু পাচ্ছে না। সেই কারণেই এই রাত দখলের ডাক। জমায়েতে দলীয় পতাকা ছাড়া আসার অনুরোধও করেন তিনি। তাঁর দাবি, সমস্ত দাবি এক করে এই অন্যায়ের শেষ দেখে ছাড়বেন তাঁরা, ছিনিয়ে নেবেন নারী স্বাধীনতা।
জানা গেছে, ১৪ অগস্ট রাত্রি ১১.৫৫ মিনিটে শহর ও শহরতলির একাধিক জায়গায় একই সঙ্গে জমায়েত করবেন মহিলারা।
১৪ তারিখ রাতে যে যে জায়গায় জমায়েত হবে বলে জানা গিয়েছে:
কলেজ স্ট্রিট
অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস
যাদবপুর এইটবি
সিঁথির মোড়
ডানলপ খালসা মডেল স্কুল
বিই কলেজ ১ নম্বর গেট, হাওড়া
মালদগ ইংলিশ বাজার পোস্ট অফিস মোড়
শিলিগুড়ি দার্জিলিং মোড়
উত্তরপাড়া, কলেজ মোড়
উত্তরপাড়া, সখের বাজার
মধ্যমগ্রাম চৌমাথা মোড়
নীলদর্পণ, বনগাঁ
শ্রীরামপুর
রায়গঞ্জ, ঘড়িমোড়
ব্যারাকপুর স্টেশন
দুর্গাপুর
শান্তিপুর ডাকঘর
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়
নৈহাটি পৌরসভা চত্বর
বহরমপুর স্কোয়ার ফিল্ড
লিলুয়া তেল কল মোড়
অশোকনগর চৌরঙ্গী মোড় (রাত ৯টা)
পাওয়ার হাউস মোড়, হাওড়া
সোদপুর বি টি রোড ক্রসিং
দমদম চাতাল
রতন পল্লী, শান্তিনিকেতন
বর্ধমান, কার্জন গেট চত্বর
এয়ারপোর্ট ১ নম্বর গেট ট্যাক্সিস্ট্যান্ড
আড়িয়াদহ হাসপাতাল মোড়
চন্দননগর নৃত্যগোপাল স্মৃতি মন্দির (রাত ৮টা)
জলপাইগুড়ি সদর হাসপতাল
আসানসোল ভগৎ সিংয়ের মূর্তির পাদদেশ
ব্যারাকপুর স্টেশন চত্বর
আরামবাগ সুধানীল সিনেমা হলের সামনে
নিউটাউন বিশ্ব বাংলা গেট
হাবড়া ১ নম্বর রেলগেট