অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের মা।
শেষ আপডেট: 11th August 2024 12:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তরুণী চিকিৎসক খুনের ঘটনায় উত্তাল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ তথা গোটা রাজ্য। অভিযুক্ত, কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
তার বাড়ি কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত রোডে। এলাকাবাসী বলছেন, সঞ্জয়কে কুখ্যাত বলেই চেনেন সকলে। ছোটবেলা থেকেই বক্সিং শিখত সে এবং মারকুটে স্বভাবের ছিল। পেশায় সিভিক পুলিশ হলেও, পাড়ায় নিজেকে কলকাতা আর্মড পুলিশের ফোর্থ ব্যাটেলিয়ান গ্রুপের পুলিশ হিসেবে পরিচয় দিত সে। কলকাতা পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে লোকজনের থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিবেশীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত সঞ্জয়ের বাড়ির পাশেই একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে কাজ করতেন সঞ্জয়ের ছোটবেলার বন্ধু রবিশঙ্কর। তাঁর অভিযোগ, কলকাতা পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর থেকেও দফায় দফায় দু’লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিল সঞ্জয়। যখনই টাকা চাওয়া হয়েছে ততবারই সঞ্জয় এড়িয়ে গেছে কোনও না কোনও কারণ দেখিয়ে।
রবিশঙ্করের কথায়, 'আমরা ছোটবেলায় একসঙ্গে বক্সিং শিখতাম। পরে সবাই যে যার কাজ শুরু করে। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি পেয়েছিলাম। কিন্তু চাকরি চলে গেছিল, তার পরে হকারি করতাম। যা জমেছিল, সব সঞ্জয়কে দিয়ে দিয়েছি। টাকা চাইলে ভয় দেখাত, আমার দোকান ভেঙে দেবে। আমরা সবাই জানতাম ওর মানসিকতা খারাপ। মেয়েদের নিয়েও সবসময় কুচিন্তা করত। রাস্তায় ইচ্ছে করে মেয়েদের ধাক্কা দিয়ে ঝামেলা বাঁধাত। এমনিতে ওকে পাড়ায় দেখাই যেত না, কখনও কখনও মধ্যরাতে ফিরত।'
অভিযুক্তের মা বলেছেন, ছেলের সঙ্গে তাঁর খুব একটা যোগাযোগ ছিল না। তাঁর মেয়েরাই তাঁকে দেখে। কিন্তু তা বলে ছেলে এমন কিছু করবে তা কল্পনা করতে পারেননি তিনি। এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দারা দাবি করেছেন, যুবক বদমেজাজি ছিলেন। আর কয়েক মাস আগে বাড়িতেও এসেছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে।
একাধিক বিয়েও রয়েছে সঞ্জয়ের। এলাকাবাসীর কথায়, যুবকের প্রথম স্ত্রী মারা যায়। তারপর একাধিক বিয়ে করেছে সে। কেউ ছেড়ে চলে গেলে, অন্য মহিলাদের সঙ্গে থাকত সে। এভাবেই চলত। যদিও অভিযুক্তের মা মালতী রায়ের দাবি, ছেলের এতগুলি বিয়ের কথা তিনি জানতেন না। শুধু লোকমুখে শুনেছিলেন। কিন্তু ছেলে যে এই ঘটনা ঘটাতে পারে তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না বৃদ্ধা।
মায়ের কথায়, 'সন্তানকে সব মা-ই ছোট থেকে বড় করে। পাঁচটা ছেলেমেয়েকে বড় করেছি। এখন শুনছি আমার ছেলে রেপ করেছে, মার্ডার করেছে। আমার জীবনটাই শেষ করে দিল। ছেলের বিপদে এখন কেউ পাশে নেই। ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। ছেলে আমার ভাল।'