শেষ আপডেট: 12th August 2024 10:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডে এবার মৃত চিকিৎসক-পড়ুয়ার চার সহকর্মীকে তলব করেছে কলকাতা পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার আগে ওই চারজনের সঙ্গেই শেষবার ছিলেন নির্যাতিতা। তাঁরা একসঙ্গে রাতের খাবারও খেয়েছিলেন। সেই সূত্রেই ওই চারজনকে তলব করেছে লালবাজার।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে অলিম্পিক্সে নীরজ চোপড়ার খেলা দেখছিলেন তরুণী। তাঁর সঙ্গে সেমিনার হলেই ছিলেন আরও চারজন। তাঁরা অনলাইনে খাবার অর্ডার দেন, সেখানেই ডিনার করেন। এরপর সকলে সেমিনার রুম থেকে চলে গেলেও তরুণী সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। পর গভীর রাতে তাঁকে ঘুম থেকে টেনে তুলে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলেই অভিযোগ। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই শেষবার তরুণীর সঙ্গে থাকা চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।
ঘটনার তদন্তে তাঁদের সঙ্গে একপ্রস্ত কথা হয়েছে পুলিশের। তবে এখন তাঁদের বয়ানও রেকর্ড করতে চায় পুলিশ। সেই কারণেই সোমবার সকলকে লালবাজার ডাকা হয়েছে। ওই চারজনও তরুণীর মতো জুনিয়র ডাক্তার। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তরুণী যে সেমিনার হলে শুয়েছিলেন সেখানে রাত ৩টের কিছু পরে ঢোকে অভিযুক্ত। নীচ থেকে সোজা চারতলার সেমিনার হলেই তিনি কেন গেলেন, কীভাবে জানলেন যে ওখানেই তরুণীকে পাওয়া যাবে, এই প্রশ্নগুলি ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। সেই বিষয়টি সম্পর্কেই জানতে উদ্যোগী পুলিশ।
ইতিমধ্যে নিজের দোষ স্বীকার করেছে অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়। কিন্তু এত বড় নৃশংস ঘটনা ঘটানোর পরও সে নিরুত্তাপ। পুলিশ সূত্রের খবর, তার মধ্যে কোনও অনুশোচনা বোধ নেই। বরং, তরুণীকে কেন সে খুন করেছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে সে! বলেছে, চিৎকার করে সবাইকে ডাকত সেই কারণে তাঁকে খুন করেছে সে। যদিও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, না খুনের পর ধর্ষণ, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরজিকরের তদন্তে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে, মৃতার শরীরের অন্তত ১১ জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বুক, পেট, পা থেকে শুরু করে ঘাড়, গলা এমনকী যৌনাঙ্গে আঘাত রয়েছে। হাড় ভেঙেছে একাধিক। অপরাধের ধরন দেখে অনেকেই মনে করছেন যে, অভিযুক্ত একা সেখানে ছিলেন না, তার সঙ্গে অন্য কেউ বা একাধিকজনও থাকতে পারে। সেই প্রেক্ষিতেও কোনও প্রমাণ অবশ্য এখনও মেলেনি।
স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন উঠে এসেছে, নির্যাতনের সময় তরুণীর চিৎকার কেন কেউ শুনতে পেল না। কেন কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে এল না। এই জায়গাতেই মূল সন্দেহ যে, অভিযুক্তের সঙ্গে সেখানে আরও কেউ থাকতে পারেন। অর্থাৎ একাধিক জন মিলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তাই তরুণী চাইলেও চিৎকার করতে পারেনি।