শেষ আপডেট: 6th March 2025 11:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কসবা কাণ্ডে (Kasba Suicide Case) মৃত যুবক সোমনাথ রায়ের মামা ও মামিকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ (Police)। এবার গ্রেফতার করা হল এক লোন এজেন্টকে (Loan Agent)। তাঁর নাম চঞ্চল মুখোপাধ্যায়। দেওয়ালে যে সুইসাইড নোট লিখে গেছিলেন সোমনাথ, তাতে এই ব্যক্তির নাম ছিল। সেই সূত্রেই চঞ্চলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পেশায় অটোচালক ছিলেন সোমনাথ। তাঁর প্রতিবেশী এবং কয়েকজন অটোচালক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমনাথের আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীল জন্ম থেকেই কঠিন অসুখে আক্রান্ত ছিল। তাঁর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করার জন্য কিছুদিন আগে নিজের অটোও বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। এদিকে এই লোন এজেন্টের কথা জানতে পেরে পুলিশের হাতে তথ্য এসেছে, ছেলের চিকিৎসার জন্য একটি ব্যাঙ্ক থেকে ১০ লক্ষ টাকা লোন নিয়েছিলেন সোমনাথ। কিন্তু সেই লোনের টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না। এই এজেন্টের বিরুদ্ধে চাপ দেওয়া অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জেনেছে, বেশ কয়েকদিন অন্তর অন্তর বাড়ি এসে সোমনাথকে হুমকি দিতেন তিনি। টাকা না পেলে খারাপ হবে, এমন হুঁশিয়ারিও নাকি দিয়েছেন। এর পাশাপাশি একাধিক পাওনাদারও আসতেন সোমনাথের কাছে। তাদের নাম দেওয়ালে লিখে রেখে যান তিনি। সেই নামগুলির মধ্যে এই লোন এজেন্টের নামও ছিল। সেই সূত্রেই এবার গ্রেফতার হলেন চঞ্চল। আজই তাঁকে আলিপুর আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ।
আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মৃতর মামা-মামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চঞ্চলের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ। সোমনাথের মামার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং ষড়যন্ত্রর অভিযোগ আনেন মৃত সুমিত্রার দিদি সুপর্ণা ভৌমিক। সুমিত্রার বাবা বিশ্বনাথ ভৌমিকও তাঁর মেয়ে, জামাই ও নাতিকে খুনের অভিযোগ এনেছেন। তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ করেননি। এদিকে সুইসাইড নোটে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ এবং মামা-মামির নাম উল্লেখ করে গিয়েছিলেন সোমনাথ। একই সঙ্গে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও এনেছিলেন তিনি।
তবে শুধুই মামার সঙ্গে সম্পত্তিগত বিবাদ নাকি সন্তান সুস্থ হবে না বুঝতে পেরেই সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত, সেটা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। ইতিমধ্যে কসবা কাণ্ডের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, তিন বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে শ্বাসরোধের কারণে। কিন্তু তাঁকে কে খুন করেছেন, বাবা না মা, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে, শিশুটির নাক এবং ঠোঁটে একাধিক আঘাত রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করার সময়ই সেই চোট লাগে তার। এতএব, সন্তানকে খুন করেই আত্মঘাতী হয়েছেন বাবা-মা।