শেষ আপডেট: 7th October 2024 17:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পার্ক স্ট্রিট থানার অভিযুক্ত এসআই অভিষেক রায়কে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। তাঁরই এলাকায় মোতায়েন এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই মহিলা নিজে চিঠি লিখে বিষয়টি জানানোর পরেই জানাজানি হয়। তার পরে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয় অভিযুক্ত এসআইয়ের বিরুদ্ধে। তাঁকে ক্লোজ করা হয়। আজ, সোমবার গ্রেফতার হলেন তিনি।
কী অভিযোগ এসআই অভিষেক রায়ের বিরুদ্ধে?
কয়েকদিন আগেই একটি অভিযোগপত্রে মহিলা সিভিক পুলিশ লেখেন, 'আমি ২০১৭ সাল থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করছি। এখন পার্ক স্ট্রিট থানার অধীনে রয়েছি। চার তারিখ রাত ৯টা থেকে আমি ডিউটি করছিলাম। সে সময়ে ওই অফিসার আমাকে তাঁর গার্ডকে দিয়ে তাঁর রেস্টরুমে ডেকে পাঠান। পার্ক স্ট্রিট থানার তিনতলায় অবস্থিত ওই ঘর। রাত প্রায় ১টা ১০ নাগাদ আমি সেখানে যাই, যা ক্যালেন্ডারের হিসেবে ৫ অক্টোবর তারিখ।'
চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, 'ওই এসআই অফিসার আমায় পূজা উপহার হিসেবে একটি নতুন সালোয়ার কামিজ দেন। আমি সেটি নেওয়ার সময়ে তিনি আমার শরীরে অবাঞ্ছিত স্পর্শ করেন। আমি বাধা দিলে তিনি বলেন এটা কোনও ব্যাপার নয়। তিনি আমায় মৌখিকভাবে সান্ত্বনা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পরে আমি আমার ছোট ভাইকে ফোন করি এবং সে কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসে। একটি ডায়েরি করতে চায়। কিন্তু ডিউটি অফিসার রণবীর দাস আমার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। আমায় বলা হয় থানাতেই কথা বলে মিটিয়ে নিতে। ঘটনাটি এড়িয়ে যেতে।'
চিঠিটি রাজ্যের মুখ্যসচিব, পুলিশ কমিশনার, জয়েন্ট পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ও পার্ক স্ট্রিট থানার ওসি-কে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যজুড়ে ঘটে চলা বিভিন্ন ঘটনার জেরে পুলিশকে এমনিতেই এখন সাধারণ মানুষ কাঠগড়ায় তুলেছে। আরজি কর থেকে জয়নগর, বারবার বিদ্ধ হচ্ছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। তার মধ্যে খাস কলকাতা শহরের বুকে মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের এই অভিযোগ যেন আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।
ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের দাবি, এর আগেও এমন ঘটনা তাঁর সঙ্গে ঘটিয়েছেন অভিযুক্ত ওই অফিসার। তিনি লিখেছেন, 'এর আগেও ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে দুপুর দেড়টা নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় তিনি পার্ক স্ট্রিট থানার কম্পিউটার রুমে আমার সঙ্গে একই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। আমি সেবার বিষয়টি উপেক্ষা করেছিলাম, পরিবারকেও কিছু জানাইনি। কিন্তু এবার আমার মানসিক অবস্থা খুবই বিপর্যস্ত। আমি নিরাপত্তাহীন বোধ করছি, আত্মসম্মানের অভাব অনুভব করছি।'
ওই মহিলা আরও লিখেছেন, যে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তিনি কোনও ডিউটি পালন করবেন না। নিচুতলার কর্মীর সঙ্গে ওই অফিসার যে আচরণ করেছেন, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো তাঁর নৈতিক দায়িত্ব বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এই চিঠিকে এফআইআর হিসেবে দায়ের করে পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেছেন তিনি।