ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 23 April 2025 09:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় (Jammu Kashmir Pahalgam Terror Attack) মৃত্যুর ঘটনায় ২৬ পর্যটকের মধ্যে বাংলার দু'জন ছিলেন বলে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জানা গেছিল। তবে তৃতীয় একজনের মৃত্যুর খবরও সামনে এল। তিনি বেহালার সখেরবাজারের বাসিন্দা সমীর গুহ। স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গেছিলেন তিনি। বুধবারই ফেরার কথা ছিল তাঁদের। তবে স্ত্রী-মেয়ে বেঁচে ফিরলেও, সমীরের আর ফেরা হল না বাড়িতে।
মঙ্গলবারের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার বৈষ্ণবঘাটা লেনের বাসিন্দা বিতান অধিকারী, পুরুলিয়ার বাসিন্দা মণীশ রঞ্জন। সেই তালিকায় নাম জুড়ল সমীর গুহর। তাঁর স্ত্রী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে ছবি তুলছিলেন তাঁরা। তারপর চেয়ার বসে কিছু খাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই গুলির আওয়াজ পান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের সামনে চলে আসে জঙ্গিরা। তারপরই গুলি চালায়।
সমীরের স্ত্রীর কথায়, গুলির আওয়াজ পেয়েই তাঁর স্বামী তাঁদের মাটিতে শুয়ে পড়তে বলছিলেন। মেয়েকেও শুইয়ে দিয়েছিলেন। পালানোর চেষ্টা করেন তারা। তবে ন্যূনতম সময়টুকু পাননি। ততক্ষণে মুখে মাস্ক লাগিয়ে সামনে এসে গেছিল জঙ্গিরা। 'ইনকো মাত ছোড়না' বলেই গুলি চালায় তারা। এক মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সমীর।
৫২ বছরের সমীর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। বুধবারই পরিবার নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। তবে বর্তমানে তাঁর দেহ রাখা আছে শ্রীনগরের মর্গে। বেহালার বাড়িতে ফেরার জন্য সাহায্যের আর্তি জানিয়েছেন জঙ্গি হানায় নিহত বাঙালি পর্যটকের স্ত্রী।
অন্যদিকে কলকাতার বৈষ্ণবঘাটার বাসিন্দার বিতান অধিকারী ছিলেন আইটি কর্মী। তিনিও স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গেছিলেন। মৃত বাংলার আরও এক বাসিন্দা মণীশ রঞ্জন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী, সন্তানদের সামনে তাঁকেও গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা।
২৬ জন খুন হওয়া পর্যটকদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং যাতে কোনও ভুল না হয় সে কারণে পহেলগাওয়ের ওই জায়গা বারবার রেইকি করেছিল জঙ্গিরা।
আহত পর্যটকদের অনেকেই দাবি করেছেন, গুলি করার আগে তাদের নাম জানতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কারও আবার প্যান্ট খোলা হয় জোর করে। অর্থাৎ ধর্মীয় পরিচয় জেনেই খুন করা হয়েছে। তাঁরা এও জানান, জঙ্গিরা সকলেই ছিল ভারতীয় সেনার পোশাকে। এতএব এই ঘটনায় যে স্থানীয়রা যুক্ত থাকতে পারেন, সেই আশঙ্কাও করা হচ্ছে।