শেষ আপডেট: 22nd January 2025 01:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ব্রিগেডে সমাবেশ করব। থাকবেন দলের প্রতিষ্ঠাতা পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিও। শহিদ মিনারের সভায় ফোন বার্তায় স্পষ্ট জানালেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি। তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, 'ষড়যন্ত্র হয়েছিল যাতে তাঁরা সভা না করতে পারেন। কিন্তু কোনও প্ল্যানই কাজে আসেনি।' বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে এদিন গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
নওসাদ মনে করিয়ে দেন, প্রশাসনের এই চূড়ান্ত অসহযোগিতায় রাগ হতেই পারে। কিন্তু তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, 'আইএসফের উপর তৃণমূল কংগ্রসের এত রাগ কেন? কারণ, দলিত, আদিবাসী, মুসলমানদের হয়ে কাজ করছে এই দল? তাই যেভাবে হোক রাজ্য দলটিকে আটকাতে চাইছে। লাগাতার চক্রান্ত করছে। কিন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ। মঙ্গলবারের সমাবেশ তারই প্রমাণ।'
নওসাদ তবে এদিন বক্তব্যের বেশিরভাগ অংশেই দলিত, আদিবাসীদের উপর অত্যাচারের কথা বলেন। তাঁর অভিযোগ, জল-জঙ্গল-জমিন কেড়ে নিয়ে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে কর্পোরেটদের হাতে দেশের সম্পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। ওয়াকফ আইন সংশোধনের মাধ্যমে মুসলমানদের সম্পত্তির উপর হস্তক্ষেপ করতে চাইছে বিজেপি সরকার। তাই এই অপদার্থদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
এখানেই থামেননি তিনি। বলেন, 'আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় ন্যায়বিচার এখনও পাওয়া যায়নি। পরিবারের পাশে থেকে রাস্তায় ও আদালতে লড়ে ইনসাফ ছিনিয়ে আনতে হবে। আরও জোরদার হবে আন্দোলন।'
এদিন আইএসএফ নেতারা ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে সরব হন। সমাবেশে আইএসএফ রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষে বক্তব্য রাখেন অফিস সম্পাদক নাসিরুদ্দিন মীর, রাজ্য কমিটির সদস্য লক্ষীকান্ত হাঁসদা, গাজী সাহাবুদ্দিন সিরাজী, তাপস ব্যানার্জি, কুতুবুদ্দিন ফাতেহি। তাঁরা বলেন, 'সংগ্রামই শেষ কথা। মেকি সংখ্যালঘু দরদ দেখিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মুসলমানদের একাংশকে বিভ্রান্ত করছে। এটা হতে দেওয়া যাবে না।'
জল, জঙ্গল, জমিন দখল করে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত রুখতে হবে। দেওচা পাঁচামীতে কয়লা খনির নাম করে আদিবাসীদের উচ্ছেদ রুখতে একজোট হতে হবে। এই সব প্রসঙ্গই বক্তব্যে ঘোরাফেরা করে।
দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে শহিদ মিনার ময়দানে সভার আয়োজন করেছিল আইএসএফ। যদিও সোমবার পর্যন্ত এই সভা হওয়া নিয়ে আইনি জট ছিল। রবিবার পর্যন্ত আইএসএফের কাছে কলকাতা পুলিশের প্রয়োজনীয় অনুমতি ছিল না। অবশেষে সোমবার হাইকোর্টে মামলা করেন নওসাদ। আদালত শর্তসাপেক্ষে সভার অনুমতি দেয়। তার মধ্যে অন্যতম শর্ত ছিল, নওসাদ সশরীরে সভায় থাকতে পারবেন না। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকেই ধর্মতলায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। তা ধুন্ধুমার আকার নেয়। ওই দিন নওসাদকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। তার পর তাঁকে ৪২ দিন হাজতবাস করতে হয়েছিল।
এদিন শহিদ মিনারে নওসাদের ডাকা সভায় ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সংগঠিত জমায়েত হয়েছিল। সেই সভাতেই ফোন বার্তায় বক্তৃতা করেন নওসাদ।