শেষ আপডেট: 14th January 2025 17:27
কলকাতার বাঘাযতীন এলাকায় চারতলা বহুতল হেলে পড়েছে। ঘটনায় কোনও মৃত্যু বা আহতের খবর না থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘুম উড়েছে এক অন্য কারণে। ওই বহুতল হেলে থাকায় তা যে কোনও মুহূর্তে পুরোপুরি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যার কারণে আশেপাশের একাধিক বাড়িগুলি খালি করে দেওয়া হয়েছে। এতে কার্যত ঘরছাড়া হয়েছেন অনেকেই।
হেলে পড়া ওই বহুতলের ঠিক পাশেই থাকা এক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছিল দ্য ওয়াল। তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত। ফোনালাপে তিনি বলেন, ''আমরা যে কোনও সময়ে মরে যেতে পারতাম। যে অবস্থায় বাড়িটা রয়েছে তার জন্য পরপর সবকটি বাড়ির কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। এখন পরপর তিন-চারটে বাড়ি খালি করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন কোথায় যাব? ভীষণ বিপদে পড়ে গেছি।''
মঙ্গলবার দুপুর ২টোর কিছু পর এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ওই প্রতিবেশী মহিলা। বলেন, মিস্ত্রিরা প্লাস্টারের কাজ করছিল, বাড়ি লিফ্টিং হচ্ছিল। সেই সময়ই হঠাৎ আওয়াজ হয়, বাড়িতে ফাটল ধরে। তারপর তা ক্রমশ তাঁদের বাড়ির দিকে হেলে যায়! কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, প্রোমোটার অনেকদিন আগেই বাড়িটি হ্যান্ডওভার করে দিয়েছিলেন। তারপর বাড়ির যারা মালিক তাদের সিদ্ধান্তে হাইড্রোলিক জ্যাক দিয়ে উঁচু করা হচ্ছিল।
বাড়ি উঁচু করার বিষয় নিয়ে প্রতিবেশীদের কাউকে অবগত করা হয়েছিল কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে ওই মহিলা বলেন, ''আমাদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। শুধু জানানো হয়েছিল।'' তাঁর দাবি, প্রোমোটারের ১৮ লক্ষ টাকা লাগত, তাই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছিল। এই প্রোমোটারের নাম সুভাষ রায় বলে জানা গেছে, বাঘাযতীনে তাঁর বেডিং স্টোর্স রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা।
এই ফ্ল্যাটটি কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ বছরের পুরনো বলে জানা গেছে। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দাদের কথায়, বহুতলে অনেক আগে থেকেই ফাটল লক্ষ্য করা গেছিল। কিন্তু সেইভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে যে প্রোমোটার বিল্ডিং তৈরির দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরও খোঁজ শুরু হয়েছে এখন। অভিযোগ উঠছে, কমদামি বা নিকৃষ্টমানের সামগ্রী দিয়ে এই বহুতল তৈরি করা হয়েছিল। আর পুরসভার নিয়ম মেনেও তা তৈরি করা হয়নি। এই ঘটনা তারই পরিণতি।