শেষ আপডেট: 19th September 2024 00:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের বৈঠক শেষ হয়েছে প্রায় ৩ ঘণ্টা আগে। তবে এখনও কেউই নবান্ন থেকে বেরিয়ে আসেননি। সূত্র মারফৎ জানা গেছে, জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টেলিফোনিক মিটিং করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এবং পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
এখনও পর্যন্ত সূত্র মারফৎ যা খবর মিলছে, জুনিয়র ডাক্তারদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। তবে তাঁদের সময় দিতে হবে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। এদিকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিগুলি মানার বিষয়ে নির্দিষ্ট সরকারি সার্কুলার জারি করার দাবি বৈঠকে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পাশাপাশি ডিজি রাজীব কুমার বৈঠকে বলেন, সব জেলায় মহিলা পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত উইনার্স টিম রয়েছে। সেক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা কোনও সমস্যা হবে না। বুধবার সন্ধে ৭.৩৫ মিনিটে নবান্নে প্রবেশ করে জুনিয়র ডাক্তাররা। ৭.৪০ থেকে ৯.৪০ পর্যন্ত বৈঠক হয়। তারপর রাত ১২.২০ পর্যন্ত মিনিটস লেখার কাজ চলে। ডাক্তারদের মূলত ৮ দফা দাবি ছিল। রাজ্য সরকার একটি বাদে সবকটি মেনেছে বলেই খবর।
গত সোমবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে একটি বৈঠক হয়েছিল। ডাক্তারদের দেবে মেনে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে কর্মবিরতি তোলার কথা থাকলেও তোলেননি ডাক্তাররা। বরং প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টাস্ক ফোর্স গঠন , সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বাকি বিষয়গুলি পূরণের দাবিতে বুধবার সকালে ফের নবান্নে চিঠি দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেই দাবি মেনে এরপরই আলোচনায় বসতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। সন্ধে ৭টার কিছু পর এই বৈঠক শুরু হয়েছিল।
স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধর্নাস্থল থেকে আন্দোলনরত ৩০ জন জুনিয়র চিকিৎসক নবান্নে গেছেন। তাঁদের সঙ্গে দুজন স্টেনোগ্রাফারও রয়েছে। এই বৈঠকে যাওয়ার আগে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁরা অবশ্য জানিয়েছিলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফেরার বিষয়ে তাঁরা এখনই কোনও আশ্বাস দিতে পারছেন না।
জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত যে নিরাপত্তার কথা সরকার বলছে তা থিওরেটিকাল তথা তাত্ত্বিক। মেডিক্যাল কলেজে হুমকির সংস্কৃতি ও পরিবেশে লাগাম টানতে যে ধরনের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা ও নজরদারি থাকা উচিত তা সরকারি প্রস্তাবে নেই। অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। তাঁদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে চার ও পাঁচ নম্বর পয়েন্টের এখনও পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়নি। সেই কারণেই বুধবার ফের বৈঠক চেয়েছিলেন তাঁরা। রাজ্য সরকারের তরফেও সাড়া মেলে।
এদিকে বুধবার যখন জুনিয়র ডাক্তাররা নবান্নে বৈঠক করছেন সেই সময়ই দেখা যায় তাঁদের ধর্নাস্থল থেকে একাধিক ফ্যান একে একে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে! কী কারণ?
কেউ কেউ মনে করছেন, ধর্নাস্থলে হয়তো 'ইনপুট' এসেছে কর্মবিরতি ওঠার। তাই আস্তে আস্তে ধর্না মঞ্চ খালি করা হচ্ছে। কিন্তু অন্য এক পক্ষের দাবি, আন্দোলনের রাশ ধরে রাখতে পারছেন না জুনিয়র ডাক্তাররা। শুধু ফ্যান নিয়ে যাওয়া ফ্যাক্টর নয়, খালি হচ্ছে ধর্নাস্থলও। আগের মতো আর মানুষ আসছেন না তাঁদের সঙ্গে ধর্না দিতে! কর্মবিরতি উঠে গেলে ভাল, কিন্তু যদি তা না হয় তাহলে এই বিষয়টি জুনিয়র ডাক্তারদের চিন্তা হয়ে দাঁড়াবে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।