আরজি করে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 28th August 2024 18:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ করার সময়ে পুলিশি আক্রমণের শিকার হয়েছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। শুধু আক্রমণ নয়, তাঁর উপর রীতিমতো পুলিশি হেনস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। অভিযোগ করেছেন, মহিলা পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বুকে ধাক্কা মারে পুরুষ পুলিশ। এই নিয়ে কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি।
৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনে সেদিনই প্রতিবাদে বসেছিলেন সিপিএম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সেদিনই সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ হাসপাতালের মর্গ থেকে নিহত ডাক্তারের দেহ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। সে সময়ে দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান মীনাক্ষী। তিনি দাবি করেন, নিহতের পবিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলতে চান এবং জানতে চান যে পুলিশের কেউ তাঁদের উপর প্রশাসনিক প্রভাব খাটাবার চেষ্টা করছে কিনা।
এই সময়ে মীনাক্ষী ও তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মী-সমর্থকদের আটকাতে পুলিশি বলপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠে। সে দিনের অসংখ্য ছবি এবং ভিডিও-ও ভাইরাল হয়। এবার সেই পুলিশের আক্রমণের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানালেন মীনাক্ষী।
তিনি কমিশনারের উদ্দেশে করা সেই অভিযোগে লেখেন, 'আমি মীনাক্ষী মুখার্জী, ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক, আমার ঠিকানা ৭৯/৩এ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, কলকাতা - ৭০০০১৪। আমি এই মর্মে জানাইতেছি যে গত ৯ অগস্ট ২০২৪ তারিখে আরজি কর মেডিকেল কলেজে যে নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে তার প্রতিবাদে আর জি কর হাসপাতালের সামনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এমত অবস্থায়, আমরা জানতে পারি যে নিহতের পরিবারের লোকেরা পুলিশের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়েছেন এবং পুলিশ তাদের উপর প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদন্তকে প্রভাবিত করছে যা নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থী।'
মীনাক্ষী আরও লেখেন, 'এরপর সন্ধ্যা ৭:৩০ নাগাদ আরজি কর হাসপাতালের মর্গ থেকে পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা পুলিশকে জানাই যে নিহতের পবিবারের লোকের সাথে আমরা কথা বলতে চাই এবং জানতে চাই যে পুলিশের কেউ তাদের উপর প্রশাসনিক প্রভাব খাটাবার চেষ্টা করছে কিনা। নিরপেক্ষ তদন্ত সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও প্রকার প্রভাব মুক্ত রাখা জরুরি।'
যুবনেত্রীর অভিযোগ, 'এইসময় উপস্থিত পুলিশের একাংশ অভিষেক গুপ্তার নেতৃত্ব কোনও রকম মহিলা পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বুকে ধাক্কা মারে, কয়েকটি সজোরে ঘুষি চালায়, মহিলা পুলিশ ছাড়াই বহু সংখ্যক পুরুষ পুলিশ আমাদের ধাক্কা দেয়, মারে।'
মীনাক্ষী দাবি করেন, 'সে সময়ে তীব্র ব্যথা ও যন্ত্রণা উপলব্ধি করলেও শুরুতে গুরুত্ব না দিয়ে পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদ যখন আরোও জোরালো হয়ে ওঠে তখন অপরাধী পুলিশরা রাস্তায় প্রতিবাদ করার কারণে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং বারেবারে অবস্থানরত সমব্যাথী আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ছত্রভঙ্গ করার ছলনায় হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে।পুলিশ আন্দোলনকারীদের পাশবিকভাবে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার করার পর নিহতের শবদেহ নিয়ে বেরিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় উপস্থিত সকল অপরাধী পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর পূর্বক তদন্ত করে কঠোর শাস্তি সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আর্জি জানাই যাতে সাধারণ মহিলাদের পুলিশের প্রতি আস্থা ফিরবে ও আমরা আপনার নিকট বাধিত থাকিব।'